‘বল নড়তে দেখলে হাত তুলুন’, বলছেন দিয়েগো সিমেওনে, তবে কার্লো আনচেলত্তি বললেন, আলভারেসের পা বলে দুইবার স্পর্শ করতে দেখেছেন তিনি।
Published : 13 Mar 2025, 11:45 AM
ম্যাচজুড়ে অনেকবারই বেশ উত্তেজিত দেখা গেছে দিয়েগো সিমেওনেকে। ম্যাচ শেষে তো যেন খ্যাপাটে হয়ে উঠলেন তিনি। তার ছুটোছুটি, চিৎকার, সবকিছুতেই ফুটে উঠছিল, তিনি যেন ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন। আতলেতিকো মাদ্রিদের কোচের সেই বিস্ফোরণ দেখা গেল ম্যাচের পর প্রতিক্রিয়াতেও। রেয়াল মাদ্রিদের কোচ কার্লো আনচেলত্তি অবশ্য শান্ত কণ্ঠে বলছেন, সিদ্ধান্ত ঠিকই ছিল।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোর দ্বিতীয় লেগে আলোচিত এই ঘটনার বড় ভূমিকা ছিল ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণে। টাইব্রেকারে দলের দ্বিতীয় শটে আতলেতিকোর হুলিয়ান আলভারেস বল জালে জড়ালেও গোলটি একটু পর বাতিল করা হয়। ভিএআর দেখে রেফারি সিদ্ধান্ত জানান, আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড ‘ডাবল টাচ’ করেছেন। মানে শট নেওয়ার সময় বলে স্পর্শ করেছেন দুইবার।
প্রথম লেগে ২-১ গোলে পিছিয়ে থাকা আতলেতিকো এই লেগে ঘরের মাঠে জেতে ১-০ গোলে। পরে টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে জিতে কোয়ার্টার-ফাইনালে পা রাখে রেয়াল মাদ্রিদ।
দুই নগর প্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াই নানা সময়েই উত্তেজনা আর বিতর্কের বারুদ ছড়িয়ে আসছে বছরের পর বছর ধরে। এবারও ব্যতিক্রম নয়।
সিমেওনে তো বরাবই উচ্চকিত একজন কোচ, প্রতিক্রিয়া প্রকাশে যিনি পিছপা হন না কখনোই। এই ম্যাচের পর তার দাবি, আলভারেসের গোল বাতিল করা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় তার মনে আছে।
“ফুটেজ দেখেছি আমি। রেফারি বলছেন যে, হুলিয়ান বলে স্পর্শ করেন সাপোর্টিং পা দিয়েও। কিন্তু আমি তো দেখছি, বল নড়েনি। গোল হয়েছে কী হয়নি, এটা নিয়ে বিতর্কের অবকাশ আছে। হুলিয়ান যখন শট নিয়েছে, বল তো একটুও নড়েনি।”
“পেনাল্টি শুটআউটে ভিএআর রিভিউ হতে আমি কখনও দেখিনি… কখনও নয়…।”
সংবাদ সম্মেলনে থাকা সংবাদকর্মীদের দিকেও চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন সিমেওনে।
“আপনাদের মধ্যে কেউ দেখেছেন যে সে বলে দুইবার স্পর্শ করেছে? স্টেডিয়ামে যারা উপস্থিত ছিলেন, তাকে যদি দেখে থাকেন বলে দুইবার স্পর্শ করতে, বল নড়তে, তাহলে দয়া করে সামনে এসে হাত তুলুন…।’
“কাউকে তো হাত তুলতে দেখছি না। কাজেই এটুকুই বলার আছে… পরের প্রশ্ন (করুন)।’
আলভারেস শট নেওয়ার পরপরই রেয়ালের গোলকিপার থিবো কোর্তোয়া আপত্তির কথা জানান রেফারিকে। রেয়ালের পক্ষ থেকেও অনুরোধ করা হয় গোলটি পরখ করে দেখতে। তবে আনচেলত্তি ম্যাচের পর বললেন, ম্যাচ অফিসিয়ালরা আগেই ব্যাপারটি খেয়াল করতে পেরেছিলেন।
“আমার মনে হয়, তারা আগেই বুঝতে পারছিল। আমরা যখন সংশয়ের কথা তাদেরকে বলেছি, এর আগে তারা নিজেরাই সনাক্ত করতে পেরেছিল। শুরুতে আমি বুঝতে পারিনি। পরে আমি এটা দেখেছি (ভিডিও) এবং মনে হয়েছে, সে দুইবার বলে স্পর্শ করেছে, তার বাঁ পা লেগেছে বলে।”
তুমুল লড়াইয়ের পর শেষ পর্যন্ত বিদায় নিলেও দলের লড়িয়ে মানসিকতায় গর্বের উপকরণ পাচ্ছেন আতলেতিকো কোচ।
“আমার ছেলেদের নিয়ে আমি গর্বিত। সত্যিই ওদেরকে নিয়ে খুশি, কারণ আমরা অনুকণীয় লড়াই দেখাতে পেরেছি। আমাদের সমর্থকেরা হতাশ মনে বাড়ি ফিরেছে। তবে এটা জানে, তাদের দল নিজেদের সবটুকু উজাড় করে দিয়েছে। দারুণ একটি রাত ছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা সামনে এগোতে পারি। হেরে ঘরে ফিরছি, তবে শান্তিটুকু আছে (লড়াই করার)…।”