টটেনহ্যামকে ‘হৃদয়ে নিয়ে’ নতুন ঠিকানায় লরিস

১১ বছর ইংলিশ ফুটবলে খেলে এবার যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবলে পাড়ি জমালেন ফ্রান্সের বিশ্বকাপজয়ী গোলকিপার।

চুক্তির ৬ মাস বাকি ছিল এখনও। তবে বাস্তবতা নিশ্চয়ই অনুধাবন করতে পারছিলেন উগো লরিস। মাঠে নামার সুযোগ তো পাচ্ছিলেন না একদমই। ৩৭ বছর বয়সী গোলকিপার তাই আগেভাগেই চূড়ান্ত করে ফেললেন ক্যারিয়ারের ভবিষ্যৎ। টটেনহ্যাম হটস্পার থেকে ফ্রান্সের বিশ্বকাপজয়ী তারকা নাম লেখালেন যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলস এফসিতে।

দুই ক্লাবই শনিবার বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন এই খবর। আপাতত এক বছরের জন্য নতুন ক্লাবের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে লরিসের। তবে চুক্তিতে সুযোগ রাখা হয়েছে পরবর্তীতে আরও দুই বছর বাড়ানোর।

টটেনহ্যামে লরিসের ১১ বছরের বর্ণাঢ্য অধ্যায়ের সমাপ্তি হলো এতে। লম্বা সময় শুধু নির্ভরতার সঙ্গে ক্লাবের গোলবারই সামলাননি, দলকে নেতৃত্বও দিয়েছেন ৮ বছর। বিদায় বেলায় সামাজিক মাধ্যমে ভিডিও বার্তায় তিনি বললেন, এই ক্লাবকে হৃদয়ে ধারণ করবেন আজীবন।

“প্রথম দিন থেকেই আমার পাশে থাকার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। আপনাদের একজন হয়ে থাকতে পারা ও অধিনায়কদের একজন হতে পারা ছিল দারুণ সম্মানের।”

“এখন এই অধ্যায়ের সমাপ্তি, তবে আপনারা সবসময়ই আমার হৃদয়ে থাকবেন। আমার ও আমার পরিবারের কাছে স্পার্সের বিশেষ জায়গা থাকবে সবসময়ই। একসঙ্গে ভাগাভাগি করা সবটুকু স্মৃতির জন্য কৃতজ্ঞতা। সবার জন্য শুভ কামনা।”

২০১২ সালে অলিম্পিক লিওঁ থেকে টটেনহ্যামে পাড়ি জমান লরিস। দ্রুতই প্রথম পছন্দের গোলকিপার হয়ে ওঠেন তিনি। তার দারুণ পারফরম্যান্সে দলে জায়গা হারান ক্লাবের গ্রেট হয়ে ওঠা গোলকিপার ব্র্যাড ফ্রিডেল।

ক্রমেই ক্লাবের বড় ভরসার জায়গা হয়ে ওঠেন লরিস। ২০১৪ সালে ৫ বছরের নতুন চুক্তি করেন টটেনহ্যামের সঙ্গে। ২০১৫ সালের অগাস্টে পান অধিনায়কত্বের ভার। সেই থেকে গত অগাস্ট পর্যন্তও তিনি ছিলেন নেতৃত্বে।

তবে বয়সের প্রভাব কিছুটা পড়ছিল তার পারফরম্যান্সে। ভাটার টান লক্ষ্য করা যাচ্ছিল। গত মৌসুম থেকেই অনিয়মিত হয়ে পড়েন একাদশে। ওই মৌসুমে মোট ২৫টি ম্যাচে মাঠেন নামে তিনি। তবে গত জুলাইয়ে অ্যানজ পোস্টেকগ্লু কোচ হয়ে আসার পর আর কোনো ম্যাচে মাঠে নামা হয়নি লরিসের।

টটেনহ্যামের হয়ে সব মিলিয়ে ৪৪৭টি ম্যাচ খেলেছেন লরিস। কোনো গোল হজম করেননি ১৫১ ম্যাচে। ক্লাবের হয়ে সেরা সাফল্য ২০১৮-১৯ চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল খেলা। সেবার তারা হেরে যান লিভারপুলের কাছে।

ফ্রান্সের ২০১৮ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক দেশের হয়ে রেকর্ড ১৪৫ ম্যাচ খেলে গত জানুয়ারিতে বিদায় জানান আন্তর্জাতিক ফুটবলকে। এবার ক্লাব ফুটবলের শীর্ষ পর্যায়ের অধ্যায় চুকিয়ে পৌঁছে গেলেন শেষ বেলার ঠিকানায়।

নতুন ক্লাবের হয়ে তার অভিযান শুরু হবে আগামী ফেব্রুয়ারিতে। এমএলএস কাপের রানার্স আপ দলটি মেজর লিগ সকারে নতুন মৌসুম শুরু করবে আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি ঘরের মাঠে সিয়াটলের বিপক্ষে।