কাবরেরার চোখে বাংলাদেশের গ্রুপ ‘চ্যালেঞ্জিং’

গ্রুপ পর্ব পেরিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সেমি-ফাইনালে ওঠার ব্যাপারে আশাবাদী বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের কোচ হাভিয়ের কাবরেরা।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 May 2023, 10:44 AM
Updated : 17 May 2023, 10:44 AM

এবারের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নেওয়া আট দলের মধ্যে ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে সবচেয়ে এগিয়ে লেবানন। তাদের সঙ্গে ‘বি’ গ্রুপ পড়েছে বাংলাদেশ। গ্রুপের বাকি দুই দল মালদ্বীপ ও ভূটান। তবে ড্রয়ের পর লেবানন নিয়েই বাংলাদেশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরা মুখোমুখি হলেন প্রশ্নের। চ্যালেঞ্জিং গ্রুপ বললেন বটে, তবে নিজের দলের সামর্থ্যে আস্থা রাখার কথাও এই স্প্যানিশ কোচ জানালেন আত্মবিশ্বাসের সুরে।

ভারতের দিল্লিতে বুধবার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ১৪তম আসরের ড্র অনুষ্ঠিত হয়। ‘এ’ গ্রুপে স্বাগতিক ভারতের সঙ্গে আছে কুয়েত, নেপাল ও পাকিস্তান।

দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের সর্বোচ্চ এই প্রতিযোগিতা আগামী ২১ জুন ভারতের বেঙ্গালুরুতে শুরু হয়ে ৪ জুলাই শেষ হওয়ার কথা।

এবারের সাফের দলগুলোর মধ্যে ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ের দিক থেকে সবচেয়ে শক্তিশালী দল লেবানন (৯৯তম)। ‘বি’ গ্রুপের বাকি তিন দলের মধ্যে মালদ্বীপ ১৫৪তম, ভুটান ১৮৫তম ও  বাংলাদেশ ১৯২তম।

লেবাননের বিপক্ষে জয় ও হার দুই রকম অভিজ্ঞতাই আছে বাংলাদেশের। ২০১১ সালে লেবাননের বিপক্ষে ব্রাজিল বিশ্বকাপের বাছাইয়ে বৈরুতে ৪-০ গোলে হেরে গেলেও ঢাকায় জিতেছিল ২-০ ব্যবধানে।

বাফুফে ভবনে গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে আলাপচারিতায় কাবরেরা জানালেন নিজেদের গ্রুপে লেবাননকে পেয়ে ভড়কে যাচ্ছেন না তারা।

“গ্রুপ নিয়ে আমার প্রথম অনুভূতি হচ্ছে, এটা চ্যালেঞ্জিং গ্রুপ। আমরাও প্রত্যাশা করছিলাম… দুটি গ্রুপই কঠিন। ফিফার র‌্যাঙ্কিংয়ের সবচেয়ে উপরে থাকা লেবাননকে গ্রুপে পেয়েছি, কিন্তু ড্র নিয়ে আমাদের মনোভাব ইতিবাচক। বিশ্বাস করি, আমরা যদি নিজেদের পর্যায়ের পারফরম করতে পারি, আমাদের সুযোগ থাকবে লক্ষ্য অর্জনের।”

“আবারও বলছি, আমরা ‘ম্যাচ বাই ম্যাচ’ যেতে চাই। প্রথমে সেমি-ফাইনালে উঠতে চাই। ড্র নিয়ে আমরা খুশি। দুটি গ্রুপই শক্তিশালী এবং চ্যালেঞ্জিং। কিন্তু আমরা নিজেদের উপর বিশ্বাস ধরে রাখব। ইতিবাচক থাকব এবং লক্ষ্য অর্জনের আশা রাখব।”

২০০৩ সালে সবশেষ এই মুকুট জেতা বাংলাদেশ ২০০৫ সালে সবশেষ ফাইনাল খেলেছিল, সেবার ভারতের কাছে হারে দল। ২০০৯ সালের পর এই প্রতিযোগিতার সেমি-ফাইনালেও উঠতে পারেনি বাংলাদেশ। ব্যর্থতার বৃত্ত এবার ভাঙতে আশাবাদী কাবরেরা।

“আমরা বিশ্বাস করি, সব প্রতিপক্ষের জন্য আমরা পরিস্থিতি কঠিন করে তুলতে পারি এবং নিজেদের সেরাটা পারফরম করে (লক্ষ্য পূরণ করতে পারি)। নিজেদের সামর্থ্য আমরা জানি, সেমি-ফাইনালে ওঠার লড়াই করার মতো সক্ষমতা আমাদের আছে।”

“(সেমি-ফাইনাল জিততে দুইটা জয় লাগবে কিনা) এটা অনেক সময় পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে। তবে সেমি-ফাইনালে উঠতে হলে আমাদের যোগ্য দল হয়ে উঠতে হবে, ম্যাচ জিততে হবে।”

আগামী ৪ জুনে ঢাকায় বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় প্রস্তুতি শুরু করবেন কাবরেরা। এরপর কম্বোডিয়া গিয়ে ১৫ জুন একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে সেখান থেকে বেঙ্গালুরু যাবে দল।

এরই মধ্যে ৩৫ জনের প্রাথমিক দলও দিয়েছেন কাবরেরা। ২৭ জনের চূড়ান্ত দল এখান থেকেই বেছে নেওয়া হবে বলেও জানালেন তিনি।

“সাফের আগে আমরা কম্বোডিয়ায় গিয়ে তাদের বিপক্ষে একটা প্রস্তুতি ম্যাচ খেলব। আমি মনে করি, সেটা আমাদের জন্য ভালো একটা চ্যালেঞ্জ হবে। এখানে এক সপ্তাহ প্রস্তুতি নেব এবং কম্বোডিয়া ম্যাচের পরও দল গুছিয়ে নেব।”

“বর্তমান স্কোয়াড নিয়ে আমি খুশি। যে ৩৫ জন প্রাথমিক বাছাই করেছি, এর সঙ্গে নতুন কেউ যোগ হবে না। এখান থেকেই আমি ২৭ জনকে বেছে নিব। খেলোয়াড়দের ইনজুরি বা অনেক কিছু হতে পারে। তখন আমরা সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেব।”

এলিটা কিংসলে ক্লাব ফুটবলে সেরা একাদশে অনিয়মিত। অবশ্য ফেডারেশন কাপের দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে তার ক্লাব সতীর্থ ফয়সাল আহমেদ ফাহিম জোড়া গোল করেন। শেষ রাসেল ক্রীড়া চক্রকে ৩-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে উঠে যায় আবাহনীও।

ফেডারেশন কাপ ও লিগের খেলাগুলো মাঠে বসেই দেখছেন কাবরেরা। ফাহিমের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্টির কথা জানালেন কিংসলের ‘ম্যাচ টাইম’ নিয়ে জানালেন হতাশা।

“ফাহিম ভালো করেছে। দুই গোল করেছে, বিরতির আগে সে দারুণ খেলেছে। এটা আমার জন্য ভালো খবর। আমি জানি এলিটা পরিশ্রম করছে। কিন্তু সে ম্যাচ টাইম পাচ্ছে না বেশি। তো তার জন্য বিষয়গুলো বেশ কঠিন। আশা করি, বাকি ম্যাচগুলো সে খেলার জন্য আরও বেশি সময় পাবে।”