বিবাদমান দুই পক্ষই গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ তীরের বিশ্ব ইজতেমা সফলভাবে করবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।
শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি দেখতে এসে বুধবার আইজিপি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, “ইজতেমার উভয় পক্ষের সঙ্গে আমরা বসেছি ও কথা বলেছি। তাদের মধ্যে যে মতবিরোধ আছে সেটা নিরসনের জন্য আমরা আহ্বান জানিয়েছি।“
“আমরা বিশ্বাস করি, তারা সবাই মিলে আমাদেরকে কথা দিয়েছেন, এই অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে করতে যথাযথভাবে এক পক্ষ অপর পক্ষকে সহযোগিতা করবেন। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখতে উভয় পক্ষ আমাদেরকে সহযোগিতা করবেন।”
“এ বিষয়ে আমরা আস্থা রাখতে চাই তাদের উপরে এবং তারা আমাদেরকে কথা দিয়েছেন”, যোগ করেন পুলিশপ্রধান।
আগে এক মঞ্চ থেকেই একবারই বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন হতো। কিন্তু মাওলানা জোবায়ের এবং মাওলানা সা’দ পক্ষের অনুসারীরা এ নিয়ে নিজেদের মধ্যে বিভেদে জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে দুই পক্ষ বিশ্ব ইজতেমা দুইবারে করার সিদ্ধান্ত নেয়।
করোনাভাইরাসের প্রকোপের আগে দুই বছর দুই ভাগে বিশ্ব ইজতেমা করেছে দুই পক্ষ। মাঝখানে মহামারীর কারণে দুই বছর ইজতেমার কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এবার থেকে এই সম্মিলন আবার শুরু হচ্ছে।
এবার মাওলানা জোবায়েরের অনুসারীরা প্রথম পর্বে ১৩-১৫ জানুয়ারি এবং মাওলানা সা’দ পক্ষের অনুসারীরা ২০-২২ জানুয়ারি ইজতেমা পরিচালনা করবেন। প্রতি পর্বেই শেষ দিনে আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।
বিশাল ইজতেমার আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা নিয়োজিত থাকেন। নিরাপত্তার অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে এবার সাইবার নিরাপত্তার বিষয়টিও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যুক্ত করেছে।
প্রস্তুতি দেখতে এসে টঙ্গীর ময়দানে আইজিপি ইজতেমা ছাড়াও দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন।
এ সময় পুলিশপ্রধান তার বাহিনীর সক্ষমতার কথা তুলে ধরে বলেন, “এ সরকারের সময়ে প্রধানমন্ত্রী পুলিশ বাহিনীকে বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। এর মাধ্যমে আমরা জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদসহ যেকোনো আইনশৃঙ্খলাজনিত চ্যালেঞ্জ সফলভাবে মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছি। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের আস্থা ও ভালোবাসা আমরা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। আস্থার জায়গা আমরা যেভাবে অর্জন করেছি সেই আস্থাকে ধরে রাখার জন্য প্রস্তুত আছি এবং সেই প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে।”
“নির্বাচনসহ যেকোনো সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোকাবিলা পুলিশ সবসময় করে আসছে। এটা করতে করতে আমাদের যে অভিজ্ঞতা এসেছে তার নিরিখেই নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করে থাকি। এর আগে আমরা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনসহ সবগুলো নির্বাচন সফলভাবে দায়িত্ব পালন করে সুন্দরভাবে শেষ করেছি। দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আগামীদিনেও আমরা যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষম হব।”
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- স্পেশাল ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মনিরুল ইসলাম, টুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক হাবিবুর রহমান, পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক আতিকুল ইসলাম, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলাম, অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আলমগীর হোসেন।