“আমাদের মধ্যে কিছু রাজনৈতিক ভুল বোঝাবুঝি ছিল। এখন আমরা ঐক্যবদ্ধ,“ বলছেন একরামুল করিম চৌধুরী।
Published : 13 Feb 2023, 10:08 PM
ওবায়দুল কাদের টানা তৃতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় তার নির্বাচনী এলাকা নোয়াখালীর কবিরহাটে সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছে।
এ উপলক্ষে অর্ধ লাখ মানুষের জন্য মেজবানির আয়োজন করেছেন সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী, যেখানে ২০০ মণ মাংস রান্না হবে।
মঙ্গলবার দুপুরে এ সংবর্ধনা ও মেজবানির আয়োজন করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকহওয়ায় পর এই প্রথম ওবায়দুল কাদের নিজের জেলা নোয়াখালীতে যাচ্ছেন।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের নোয়াখালী-৫ (কোম্পানিগঞ্জ-কবিরহাট) আসনের সংসদ সদস্য। একরামুল করিম চৌধুরীর বাড়ি কবিরহাটে হলেও তিনি নোয়াখালী-৪ (সদর-সুবর্ণচর) আসনের সংসদ সদস্য।
একরামুল করিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ওবায়দুল কাদের ভাইকে তৃতীয়বারের মতো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করায় ২০০ মণ গোশত দিয়ে ৫০ হাজার মানুষের খাবারের আয়োজন করা হচ্ছে। প্রতি ব্যাচে পাঁচ হাজার মানুষ বসতে পারবে।“
কবিরহাট উপজেলার সোন্দলপুরের গ্রামে নিজের বাড়িতে এই মেজবানির আয়োজন করেছেন একরামুল করিম।
নোয়াখালী-৫ আসনে এক সময়ের আওয়ামী লীগ প্রার্থী হাজি মো. ইদ্রিসের ছেলে একরামুল করিম স্থানীয় রাজনীতিতে ওবায়দুল কাদেরের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে নেমেছিলেন ২০০১ সালের নির্বাচনে।
সেই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী একরাম ৪০ হাজার ভোট পেয়েছিলেন, তাতে ওবায়দুল কাদের হেরেছিলেন বিএনপির মওদুদ আহমদের কাছে।
ওবায়দুল কাদেরের ভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জার সঙ্গে সংসদ সদস্য একরামুল করিমের বিরোধও সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছিল।
তবে গত ১০ ডিসেম্বর নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে গিয়ে ওবায়দুল কাদের নিজের ভাই এবং একরামুল করিম দুজনকেই ‘নোয়াখালীর স্বার্থে, রাজনীতির স্বার্থে’ ক্ষমা করে দেওয়ার কথা বলেন।
এরপর গত ২৫ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের ২২তম কাউন্সিলে ওবায়দুল কাদের টানা তৃতীয়বারের মতো দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এবং সেই উপলক্ষে সংসদ সদস্য একরামুল করিম এই বিশাল মেজবানির আয়োজন করছেন।
একরামুল করিম বলেন, “আমাদের মধ্যে কিছু রাজনৈতিক ভুল বোঝাবুঝি ছিল। এখন আমরা ঐক্যবদ্ধ। দলের স্বার্থে নেতাকর্মীদের নিয়ে একসঙ্গে কাজের জন্যই আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি।”
সোমবার দুপুরে সোন্দলপুরের গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, মেজবানের ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। কেউ চেয়ার-টেবিল সাজাচ্ছেন, কেউ গোশত টুকরো করছেন, আবার কেউ রান্নার আয়োজন করেছেন।চট্টগ্রামের বিখ্যাত বাবুর্চি হাবিবুর রহমান তার পাঁচ শতাধিক সহকারী নিয়ে মেজবানির রান্নার কাজ করবেন।
বাবুর্চি হাবিবুর রহমান বলেন, ৫০০ জন বয়-বেয়ারা মিলে সুস্বাদু করে এই মেজবানির আয়োজন করা হচ্ছে। মেজবানিতে সাদা ভাত, মাংস, ডাল ও লাউ দিয়ে ‘নলা’ থাকবে।
রাহি হুদ্দা নামের এক স্বেচ্ছাসেবক বলেন, “আয়োজন সফল করতে আমরা ৫০০ স্বেচ্ছাসেবক কাজ করব। দুইটা গেইট রয়েছে। এক গেইট দিয়ে মানুষ প্রবেশ করবে; অন্য একটি দিয়ে বের হবে।”
এমরানুর রহমান চৌধুরী নামের এক আওয়ামী লীগের নেতা বলেন, “মেজবানের আয়োজন নিয়ে নেতাকর্মীরা খুব উচ্ছ্বসিত। বিশাল আয়োজন বলে কথা।”
জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য শাফিউল আজম পিন্টু বলেন, “চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবানের কথা সবার মুখে মুখে আছে। আমরা সকলে এই আয়োজন নিয়ে উচ্ছ্বসিত। আওয়ামী লীগই পারে এত বিশাল মেজবানের আয়োজন করতে।আশা করি, সবার অংশগ্রহণে একটি সুন্দর অনুষ্ঠান হবে।”