দগ্ধদের মধ্যে ১৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক; তাদের শরীরের ৫০ থেকে ৯০ শতাংশ পুড়ে গেছে।
Published : 13 Mar 2024, 07:24 PM
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় রাস্তার মধ্যে ‘রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার’ বিস্ফোরণে নারী-শিশুসহ অন্তত ৩২ জন দগ্ধ হয়েছেন।
বুধবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে উপজেলার মৌচাক তেলিরচালা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহতদের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, “এদের মধ্যে পুরুষ ছাড়াও নারী ও শিশু রয়েছে। তাদের জরুরি বিভাগের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।”
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক প্রদীপ চন্দ্র দাস বলেন, “এখন পর্যন্ত ৩২ জন ভর্তি হয়েছেন।”
এদিকে আহতদের হাসপাতালে আনার পর পরই সেখানে উপস্থিত হন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। তিনি রোগীদের চিকিৎসার খোঁজ-খবর নিচ্ছেন এবং তাদের সঙ্গে কথা বলছেন।
দগ্ধ পোশাক শ্রমিক রফিকুল ইসলাম বলেন, “তেলিরচালা এলাকায় একটি বাসায় গ্যাসের সিলিন্ডার থেকে শো শো শব্দে গ্যাস বের হচ্ছিল। এরপর বাড়ির লোকজন সেই সিলিন্ডারটি গলির মধ্যে ফেলে যায়।
“ইফতারের আগে ওই গলিতে যখন অনেক লোকজন চলাচল করছিল ঠিক সেই সময় সেটিতে বিস্ফোরণ ঘটে ও আগুন লাগে। সেই আগুনে গলিতে অবস্থানকারী ও চলাচলরত লোকজন দগ্ধ হয়।”
নিজে তখন ওই গলির রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন বলে জানান রফিকুল।
চিকিৎসাধীন আরিফুল ইসলাম বলেন, “একটি গ্যাস সিলিন্ডার থেকে গ্যাস বের হওয়ার শব্দ শুনে পাশের গলিতে রাখার পর পরই আগুন ধরে যায়। ফলে ওই গলি দিয়ে যাতায়াত করা প্রায় সবাই কম-বেশি দগ্ধ হয়।”
গাজীপুর ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফিন বলেন, “তেলিরচালা এলাকায় শফিক খান তার বাসার জন্য একটি গ্যাস সিলিন্ডার আনেন। পরে সিলিন্ডারটি চুলার সঙ্গে লাগানোর সময় গ্যাস বের হতে থাকে। তখন তিনি সিলিন্ডারটি বাইরে রাস্তায় ছুড়ে ফেলে দেন।
“এ সময় ওই স্থানে একটি মাটির চুলার আগুন থেকে সিলিন্ডারে গ্যাসে অগ্নিকাণ্ডের সৃষ্টি হয়। তখন রাস্তায় থাকা অনেকেই দগ্ধ হয়।
ফায়ার সার্ভিসের ওই কর্মকর্তা বলেন, এ সময় স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
হাসপাতালে যে ৩২ জনকে ভর্তি করা হয়েছে তারা হলেন- আজিজুল (২৪), তারেক রহমান (১৮), মশিউর আলী (২২), তায়েবা (৩), মোসাম্মৎ নার্গিস (২৫), রমিসা (৩৬), সুমন (২৫), কবীর (৩০), তাওহিদ (৭), রাব্বী (১৩), মো. সোলায়মান (৬), সাদিয়া খাতুন (১৮), শিল্পী (৪৫), মহিদুল (২৫), শারমিন (১১), মো. নাঈম (১৩), মুন্নাফ (১৮), মো. আরিফ (৪০), মনসুর আলী (৩০), রত্না বেগম (৪০), সুফিয়া (৯), জহুরুল ইসলাম (৩২), নাদেন (২২), ইয়াসিন আরাফাত (২১), রহিমা (৩), লালন (২৪), কমলা খাতুন (৮০), সুলাইমান মোল্লা (৪৫) নিলয় (৩), নীরব (৭), কুদ্দুস (৪৫), মোতালেব (৪৮)।
বার্ন ইন্সটিটিউটের সহকারী অধ্যাপক এস এম আইয়ুব হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, "আমাদের এখানে ভর্তি ৩২ জনের মধ্যে ১৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এই পনের জনের শতকরা ৫০-৯০ ভাগ পুড়ে গেছে। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।"