বকেয়া-বেতন-ঈদ বোনাস না দিয়েই শনিবার সকাল ৮টা থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত কারখানা বন্ধ করে দেয় বেঙ্গল সু ইন্ড্রাস্টিজের মালিক পক্ষ।
Published : 30 Mar 2024, 03:32 PM
লক্ষ্মীপুরে বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাসের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেছেন একটি জুতা কারখানার শ্রমিকরা। পরে পুলিশ লাঠিপেটা করে তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দিয়েছে।
শনিবার সকাল ৮টা থেকে ঢাকা-রায়পুর আঞ্চলিক সড়কের রায়পুর রাখালিয়া বাজার এলাকায় বেঙ্গল সু ইন্ড্রাস্টিজের শ্রমিকরা এ অবরোধ ও বিক্ষোভ করেন বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার সার্কেল শেখ সাদি।
কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের দাবি না মানায় বেলা ১২টা পর্যন্ত প্রায় চার ঘণ্টা রাস্তা বন্ধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। এতে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা ও মালবাহী যানবাহনের চালকরা।
শ্রমিকদের প্রতিনিধি রাজু, আবদুল কাদের ও তাসলিমা জানান, বেঙ্গল সু কারখানায় শ্রমিকদের তিন মাস ও দুই মাসের বেতনসহ ওভারটাইম বকেয়া রয়েছে। এছাড়া কারখানার কর্মচারীদের কারও কারও ৯ মাস- ৬ মাসের বকেয়াও আছে।
কিন্তু বকেয়া-বেতন পরিশোধ না করে এবং ঈদ বোনাস না দিয়ে হঠাৎ নোটিশ ছাড়া শনিবার সকাল ৮টা থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত কারখানা বন্ধ করে দেয় মালিক পক্ষ। শনিবার সকালে কারখানায় এসে তালা ঝুলতে দেখেন শ্রমিকরা।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাসের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন শ্রমিকরা। খবর পেয়ে রায়পুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে।
এর মধ্যে সকাল ১০টার দিকে শ্রমিক প্রতিনিধিদের নিয়ে কারখানার ম্যানেজার সাইফুল কবির, সিনিয়র প্রডাকশন ম্যানেজার নজরুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলেন রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমরান খান ও পুলিশ সুপার (সার্কেল) শেখ সাদি।
পুলিশ সুপার সার্কেল শেখ সাদি জানান, বৈঠকে রোববার দুপুর ১২টার মধ্যে শ্রমিকদের ব্যাংক হিসেবে এক মাসের বেতন দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। একই সাথে বোনাসের বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলার কথাও জানান হয়।
তবে লিখিত কোনো আশ্বাস না পাওয়ায় শ্রমিকরা কর্তৃপক্ষের এ আশ্বাস প্রত্যাখ্যান করেন। পরে ইউএনও, সহকারী পুলিশ সুপার সার্কেল, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে মালিক পক্ষ-শ্রমিক পক্ষের মধ্যে লিখিত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়ে।
সর্বশেষ দুপুর পৌনে ১২টায় ইউএনও ইমরান খান শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে মালিক পক্ষের সঙ্গে ফোনালাপের রেফারেন্স ও মালিক-শ্রমিক পক্ষের লিখিত যৌথ চুক্তি পড়ে শোনান।
তিনি জানান, রোববার শ্রমিকদের ফেব্রুয়ারি মাসের বেতনের সঙ্গে ঈদ বোনাসের ২৫ শতাংশ এবং ঈদের পরে মার্চ মাসের বেতনের সঙ্গে অবশিষ্ট ৪০ শতাংশ পরিশোধ করা হবে।
তবে উপস্থিত শ্রমিকদের একাংশ এ ঘোষণা না মেনে তিনমাসের বকেয়া পরিশোধের দাবিতে ফের রাস্তায় বসে পড়ার চেষ্টা করেন এবং পুলিশের প্রতি ইটের টুকরা নিক্ষেপ করেন। এ সময় পুলিশ লাঠিপেটা করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।
এরপরই ঢাকা-রায়পুর আঞ্চলিক সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়ে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।