“যেখানে গতবার ১৯ হাজার ভোট পেয়েছিলাম; এবার সেখানে মাত্র দুই হাজার ভোট। হিরো আলমের জনপ্রিয়তা কী এতই কমে গেছে, যে ভোট পায়নি?”
Published : 08 Jan 2024, 10:26 PM
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হেরে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের সমালোচনা করেছেন বগুড়া-৪ আসনে বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী হিরো আলম।
তিনি বলেছেন, “আওয়ামী লীগ সুষ্ঠু ভোট করে নাকি জাল ভোট করে বিদেশি পর্যবেক্ষকরা দেখবে কোথায় থেকে; তাদের চোখে তো ছানি পড়েছে। ওরা দেখতেই পারে না।”
সোমবার বগুড়া জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে ভোট বর্জনের কাগজ জমা দিতে গিয়ে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
রোববারের নির্বাচনে দুই হাজার ১৭৫ ভোট পেয়ে জামানত হারান আলোচিত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিরো আলম। তবে ফল ঘোষণা শেষ হওয়ার আগেই নিজের ফেইসবুক পেজে ভোট বর্জনের পোস্ট দেন তিনি।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে ‘নাটকীয়’ উল্লেখ করে হিরো আলম সাংবাদিকদের বলেন, “আমি ভোট করতে চাইছিলাম না। একটা কারণেই করেছি, এ আসনে প্রতিবার আমার সঙ্গে দুর্নীতি করা হয়। এবারও করবে সেটা আমি আগে থেকেই জানতাম।
“দেশবাসীর কাছে এটা প্রমাণ করার জন্যই নির্বাচনের মাঠে ছিলাম। ইচ্ছে করলে রোববার সকালেই ভোট বর্জন করতে পারতাম। কিন্তু করিনি। কারণ আপনারা শেষ পর্যন্ত দেখেন মাঠে কী হয়।”
কেন্দ্র ঘুরে ঘুরে ভোট দেখার কথা জানিয়ে হিরো আলম আরও বলেন, “আমার এজেন্টদের বলা হয়েছে, আলম যদি কেন্দ্রে আসে তখন তাকে যেন বলা হয় ভোট খুব ভালো হচ্ছে।
“কিন্তু আমরা চলে আসার পর দুপুরে তারা সিল মারছে। কিছু সিল মারাই নিয়ে এসেছিল ওরা। আমরা যখন কেন্দ্রে যাই তখন প্রতিটি কেন্দ্রে ২টা, ১৫টা, ৯৬টা করে ভোট পড়েছে।”
ভোট গণনা শেষে রিটার্নিং কর্মকর্তা দুই হাজার ১০০ ভোটের ঘোষণা করলেও হিরো আলম ২৪ হাজার ৬০০ ভোট পাওয়ার দাবি করেন।
তিনি বলেন, “আমি প্রথমে যখন ওখানে (প্রিসাইডিং কর্মকর্তার কার্যালয়) যাই তখন নৌকা পেয়েছে ছয় হাজারের মতো ভোট। কিন্তু পরে নৌকায় সিল মেরে ভোট দেখিয়েছে ২৫ হাজার। ঈগল মার্কা পেয়েছে ১০ হাজারের মতো। আমার এজেন্টরা এসব জানিয়েছেন।”
হিরো আলম অভিযোগ করে বলেন, “প্রিজাইডিং কর্মকর্তারা যখন কেন্দ্র থেকে রেজাল্ট ঘোষণা করবে তার আগে আওয়ামী লীগের লোকজন ফলাফলের কাগজ ছিঁড়ে ফেলে তাদের তৈরি করা রেজাল্ট শিট ধরিয়ে দিয়েছেন এবং তা ঘোষণার নির্দেশ দেন।
“এভাবে প্রতিটি কেন্দ্রে অনিয়ম করেছেন তারা। কাজেই আমি এই ফল মানি না। আর এই নির্বাচন নিয়ে সরকার কতটা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে, সেটা আপনারা নিজেরাই দেখেছেন।”
ভোটে গতবারের মত ‘কৌশল’ নেওয়ার অভিযোগ তুলে হিরো আলম বলেন, “গতবার আমাকে ৮০০ ভোটের ব্যবধানে তানসেনের কাছে পরাজিত দেখানো হয়েছিল। এবার ঈগলের প্রার্থীকে একশর কিছু বেশি ভোটে ফেল দেখানো হয়েছে।
“সারাজীবন কী খালি এক-দেড়শ ভোটে ফেল দেখায়? দুই থেকে চার হাজার ভোট কী কেউ কম বেশি পায় না? তানসেনের কী জনপ্রিয়তা এতই বেশি? আমার কী জনপ্রিয়তা এতই কম। যেখানে গতবার ১৯ হাজার ভোট পেয়েছিলাম। এবার সেখানে মাত্র দুই হাজার ভোট। হিরো আলমের জনপ্রিয়তা কী এতই কমে গেছে, যে ভোট পায়নি?”
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৪ আসন থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন হিরো আলম। পরে অনিয়মের অভিযোগ তুলে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান তিনি।