হাসপাতালের সহকারী পরিচালক নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, “মা পলি বেগম ও মেজো মেয়ের অবস্থা কিছুটা ভালো।”
Published : 01 Feb 2024, 11:58 PM
তিন শিশুকন্যাসহ বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টাকারী সেই নারী গোপালগঞ্জের হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গেছেন। অপরদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে না জানিয়েই দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় চলে গেছেন তাদের বাবা।
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার লংকারচর গ্রামের বাড়িতে মঙ্গলবার বিকালে তিন কন্যাকে নিয়ে বিষপান করেন টিটু মোল্লার স্ত্রী পলি বেগম। পরে তাদেরকে গোপালগঞ্জ শেখ সায়রা খাতুন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতেই তাদের ছোট মেয়ে মারা যায়।
বুধবার পলি বেগম হাসপাতালের অষ্টম তলার মহিলা ওয়ার্ডের শয্যায় শুয়ে সাংবাদিকদের বলছিলেন, পারিবারিক নির্যাতনের মুখে তিনি এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। তিনি মারা গেলে তিন মেয়ে অযত্ন-অবহেলায় বেঁচে থাকবে; কষ্টের শেষ থাকবে না। তাই তার সঙ্গে এদেরও নিয়ে যেতে চান।
৩ শিশুকন্যাকে বিষ খাইয়ে মা-ও খেলেন, এক মেয়ের মৃত্যু
বৃহস্পতিবার গোপালগঞ্জ শেখ সায়রা খাতুন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, “মা পলি বেগম ও মেজো মেয়ের অবস্থা কিছুটা ভালো। বড় মেয়ে এখনও শঙ্কামুক্ত নয়। নির্দিষ্ট সময় অতিক্রম না করা পর্যন্ত বলা যাবে না তারা শঙ্কামুক্ত কি-না।
“তবে বৃহস্পতিবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে মা ও দুই মেয়ে চলে গেছে।”
শিশুদের বাবা টিটো মোল্লা বিকালে বলেন, “আমার ছোট মেয়ে মারা গেছে। বড় মেয়ের অবস্থা ভালো না। স্ত্রী মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছে। কী করব কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না!
“তাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে সকালেই দুই মেয়েকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেই। এখন আমরা ঢাকায় আছি আর কিছু বলতে পারব না।”
পলি বেগমের মা রাজিয়া বেগম (৬০) বলেন, “আমার মেয়েটা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। একদিকে ওর বাবা থেকেও নেই (প্রবাসী); কোনো খোঁজ-খবর রাখেন না। আমাকে বিয়ে করার পরেও তিনি আরও আটটি বিয়ে করেছেন।
“এই ঘরে দুই সন্তানকে রেখে আমার অন্যত্র বিয়ে হয়। সেই সংসারে এখন আমার আট সন্তান। আমার মেয়ে পলির তিনটি মেয়ের মধ্যে একটা মারা গেল। বাকি দুইজনের অবস্থা কী হয় আল্লাহই জানে। আল্লাহর কাছে দুহাত তুলে বলি, আমার এই দুই নাতিকে রেখে যাও।”
পরিবার জানায়, টিটো মোল্লার সঙ্গে ২০১৪ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি গোপালগঞ্জের কাশীয়ানি উপজেলার ওড়াকান্দি ইউনিয়নের খাগড়াবাড়ি গ্রামের শরিফুল শেখের মেয়ে পলি বেগমের বিয়ে হয়।