মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে তৈরি পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলনের সময় গাজীপুরে ১২৩টি কারাখানায় ভাঙচুর করা হয়েছে বলে শিল্প পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এসব ঘটনায় দায়ের করা ২২ মামলায় মোট ৮৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শিল্প পুলিশের ডিআইজি মো. জাকির হোসেন খান বলেছেন, “গার্মেন্টস সেক্টরে শ্রমিকের মজুরি বাড়ানোকে কেন্দ্র করে গাজীপুরে শ্রমিক অসন্তোষ চলছে। আমাদের কাছে তথ্য আছে, ১২৩টি কারখানায় কমবেশি ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম চালিয়েছে।
“শ্রমিকদের আন্দোলন কোনাবাড়িতে বেশি। আশুলিয়াতে কিছুটা আছে বা চট্টগ্রাম এলাকায় আন্দোলন নেই। কোনাবাড়িতে একটা গ্রুপ এখানে মদদ দিচ্ছে। শিল্প পুলিশ ও গোয়েন্দারা আছে; তারাও কাজ করছে।”
শনিবার দুপুর ১২টায় গাজীপুরের কোনাবাড়িতে আন্দোলনের সময় ক্ষতিগ্রস্ত তুসুকা গার্মেন্টস পরিদর্শনে এসে ডিআইজি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
ন্যূনতম ২৩ হাজার টাকা বেতনের দাবিতে পোশাক কারখানার শ্রমিকদের চলমান আন্দোলনের মধ্যে মঙ্গলবার সাড়ে ১২ হাজার টাকা মজুরি ঘোষণা করে সরকার। কিন্তু তা প্রত্যাখান করে গাজীপুর ও সাভার শিল্পাঞ্চলে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখে শ্রমিকরা।
বিক্ষোভের মধ্যে গাড়ি ও কারখানায় ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে বিভিন্ন স্থানে শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বেঁধেছে। এই অবস্থার মধ্যে জানমালের নিরাপত্তা ও নাশকতা এড়াতে বেশ কিছু কারখানা তাৎক্ষণিক ছুটিও ঘোষণা করে।
ডিআইজি জাকির হোসেন বলেন, “সরকার এরই মধ্যে মজুরি ঘোষণা করেছে এবং আমাদের ধারণা এর পিছনে একটা গ্রুপ এদেরকে উসকানি দিচ্ছে আন্দোলন করার জন্য। এখানে যারা উসকানি দিচ্ছে, তাদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে।
সাধারণ শ্রমিকদের আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই জানিয়ে শিল্প পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, “যারা এই ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত; যেসব শ্রমিক এবং ওই শ্রমিকদের সঙ্গে বহিরাগত লোক আছে। যেসব শ্রমিকরা এসব ধ্বংসাত্মক কাজের সঙ্গে যুক্ত আছে তারাই আতঙ্কগ্রস্ত হবে এবং তাদেরকে আমরা গ্রেপ্তার করব। এর পেছনে যারা বহিরাগত আছে তাদেরকেও আমরা গ্রেপ্তার করব।”
“গাজীপুর ও কোনাবাড়ি মিলে ১৭টি কারখানা বন্ধ আছে। মালিক কর্তৃপক্ষ যাতে কারখানা চালু রাখেন আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলছি, তারা দ্রুতই উৎপাদনে যাবেন।”
এ সময় গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশ-২ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম উপস্থিত ছিলেন।