জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের স্ত্রী প্রমীলা নজরুলের স্মৃতিবিজড়িত মানিকগঞ্জের তেওতা গ্রামের বাড়িটি সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছেন সংস্কৃতিকর্মীরা।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাব চত্বরে এই দাবি জানিয়ে মানববন্ধনের আয়োজন করে প্রমীলা-নজরুল স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ ও বাঁশরী নামের একটি সংগঠন।
এ সময় বক্তারা বলেন, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এবং তার স্ত্রী প্রমীলা নজরুলের স্মৃতিবিজড়িত তেওতা গ্রামের বাড়িটি এক শ্রেণির অসৎ লোকের চক্রান্তে বেহাত হতে চলেছে। কবির স্ত্রীর জন্মভিটা তেওতার এই বসতবাড়িটি সংরক্ষণ করার দাবি জানাই।
বক্তারা আরও বলেন, প্রমীলা নজরুল ১৯০৮ সালে ১০ মে এই তেওতা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। এই গ্রামে তার শৈশব ও কৈশোর কেটেছে। প্রমীলার বাবা বসন্ত কুমার সেনের মৃত্যুর পর মা গিরিবালার সঙ্গে, কাকা ইন্দ্রকুমার সেনের চাকরিস্থল কুমিল্লার কান্দিরপাড়ের বাসায় অবস্থান করেন। সেখানেই কবির সঙ্গে প্রমীলার প্রথম পরিচয় ঘটে।
প্রমীলার সঙ্গের বিয়ের আগে ও পরে কবি কাজী নজরুল ইসলাম তেওতার বাড়িতে অনেকবার এসেছেন। কবির লেখা ’ছোট হিটলার’ কবিতায় ফুটে উঠেছে তেওতার প্রতিচ্ছবি। আর ‘হারা ছেলের চিঠি’ নামক ছোটগল্পে মনের মাধুরী মিশিয়ে কবি এঁকেছেন তেওতার চিত্রগল্প।
যমুনার পাড়ে তেওতা গ্রামের তরুর ছায়ায় কবি নজরুল ঘুরে ফিরেছেন পথে-প্রান্তরে। এই গ্রামের ধুলোমাটিতে বেড়ে উঠেছেন প্রমীলা।
বাড়িটি সংরক্ষণ করে সেখানে নজরুল-প্রমীলা পর্যটন কেন্দ্র, নজরুল-প্রমীলা গবেষণা কেন্দ্র, নজরুল-প্রমীলা স্মৃতি পাঠাগার, নজরুল-প্রমীলা জাদুঘর প্রতিষ্ঠার দাবিও জানান তারা। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের কাছে একটি স্মারকলিপিও দেন।
প্রমীলা-নজরুল স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি মিয়াজান কবীরের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে মানিকগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য প্রকৌশলী এ বি এম আনোয়ারুল হক, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) জেলা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক আবুল ইসলাম শিকদার, জাতীয় সমাতান্ত্রিক দল জাসদ জেলা শাখার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আফজাল হোসেন খান জকি, সাধারণ সম্পাদক আসলাম খান বাবু, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির জেলা সভাপতি দীপক কুমার ঘোষ, বাঁশরীর উপ-পরিচালক মাহবুবুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা রেখা রাণী গুণ, নজরুল-প্রমিলা পরিষদ জেলা কমিটির সভাপতি মোজাম্মেল হোসেন খান বাবু, সিনিয়র সহসভাপতি মসলেহ উদ্দিন খান মজলিশ উপস্থিত ছিলেন।