আরেক আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
Published : 07 Feb 2024, 09:50 PM
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে মা-মেয়েকে ধর্ষণ মামলায় গ্রেপ্তার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতিকে সাতদিনের রিমান্ডে চেয়েছে পুলিশ।
জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন, বুধবার বিকালে জেলার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে প্রধান আসামিকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতদিনের পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করা হয়।
ওই আদালতের বিচারক তানিয়া ইসলাম বৃহস্পতিবার আবেদনের ওপর শুনানির দিন ঠিক করেন।
রিমান্ড চেয়ে আদালতে তোলা মামলার প্রধান আসামি আবুল খায়ের প্রকাশ মুন্সি (৬৭) উপজেলার চর ওয়াপদা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য।
মামলার আরেক আসামি চর কাজী মোখলেছ গ্রামের মো. মেহরাজ (৪৮) আদালতে বিচারকের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন বলে পুলিশ সুপার জানান।
পরে বিচারকের আদেশে দুই আসামিকে জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
সোমবার গভীর রাতে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চর কাজী মোখলেছ গ্রামে ঘরে ঢুকে এক নারী তার ও ১২ বছর বয়সি মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা আবুল খায়ের প্রকাশ মুন্সি, একই এলাকার গরুর বেপারী মো. হারুন (৪২) ও মেহরাজের বিরুদ্ধে।
চুরির ‘নাটক সাজানোর জন্য’ সিঁধ কেটে ওই নারীর ঘরে ঢুকতে মেহরাজকে প্ররোচিত করেন অপর আসামিরা।
ওই তিনজন ঘরে ঢুকেছেন বুঝতে পেরে গৃহবধূ ‘চোর’ বলে চিৎকার দেন। তখন প্রকাশ মুন্সি ও হারুণ ওই নারীর হাত-মুখ কাপড় দিয়ে বেঁধে ধর্ষণ করেন। অন্য কক্ষে থাকা মেয়েকে ধর্ষণ করেন মেহেরাজ। ঘরে অন্য দুই শিশুকন্যা ছিল ঘুমে।
এদিকে, ভুক্তভোগী শিশুটি ঘটনার রাতে তার ও তার মায়ের ওপর চালানো নির্যাতনের পুরো বর্ণনা তুলে ধরে বিচারকের কাছে।
সকালে নিজ সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান জানান, গৃহবধূকে ধর্ষণ করতেই চুরির ‘নাটক সাজান’ আবুল খায়ের প্রকাশ মুন্সি (৬৭)।
ঘটনা ঘটিয়ে ফিরে যাওয়ার সময় ওই নারীর কানে থাকা সোনার গহনা ও ঘরে থাকা নগদ টাকা নিয়ে যান। পরে হাত-মুখের বাঁধন খুলে দেন এবং ঘটনার বিষয়ে কাউকে কিছু বললে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন আসামিরা।
এদিকে, ঘটনার পর চরজব্বর থানা মামলা করেন ভুক্তভোগী নারী।
মামলার পর মঙ্গলবার দুপুরে জেলা শহর থেকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আবুল খায়ের প্রকাশ মুন্সিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর রাতে চর ক্লার্ক ইউনিয়ন থেকে মেহেরাজকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ঘটনার সময় আওয়ামী লীগ নেতার পরনে থাকা কালো প্যান্ট, কালো কানটুপি, সিঁধ কাটার কাজে ব্যবহৃত কোদাল, কাঁচি জব্দ করে পুলিশ।
প্রকাশ মুন্সি প্রায় সময় তিন সন্তানের জননী ওই নারীকে উত্ত্যক্ত করতেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, কয়েক মাস আগে হাতিয়া থেকে এসে চর কাজী মোখলেছ গ্রামে নতুন বাড়ি করেন এক দিনমজুর। ওই বাড়িতে তিনি স্ত্রী ও তিন কন্যাকে নিয়ে বসবাস করতেন। মাঝে-মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে গেলে ২-৩ দিন বাড়ির বাইরে থাকতেন ওই নারীর স্বামী। ঘটনার রাতে গৃহকর্তা বাড়িতে ছিলেন না।