দীঘিনালার বেইলি ব্রিজ ডুবে খাগড়াছড়ির সঙ্গে রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
Published : 08 Aug 2023, 01:17 PM
টানা ভারি বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে মাইনী নদীর পানি বেড়ে প্লাবিত হয়েছে পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির নিচু এলাকা।
দীঘিনালা উপজেলার মেরুং ইউনিয়নের বেইলি ব্রিজ, সাজেক সড়কের কবাখালী বাজার, লংগদু সড়কের বড় মেরুং, মেরুংবাজার ও দাঙাবাজার এলাকার সড়কের বিভিন্ন অংশ পানিতে ডুবে গেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
মেরুং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদা বেগম লাকি জানান, তার ইউনিয়নে বেইলি ব্রিজ ডুবে যাওয়ায় খাগড়াছড়ির সঙ্গে রাঙ্গামাটির লংগদুর সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
“গতকাল (সোমবার) রাত থেকেই সড়কটিতে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। মাইনী নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বন্যার সৃষ্টি হয়েছে।”
তার এলাকায় ৬ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে জানিয়ে মাহমুদা বলেন, “আশ্রয় কেন্দ্রে ২৫টি পরিবার অবস্থান নিয়েছে। এই ভারি বর্ষণ অব্যাহত থাকলে পানি কমবে না।
দীঘিনালা উপজেলার কবাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জ্ঞান চাকমা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, “আমার ইউপিতে ৪ শতাধিকের বেশি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এসব পরিবারগুলো তাদের আত্মীয় স্বজনের বাসায় অবস্থান করছে। আমাদের আশ্রয় কেন্দ্রে এখনও কেউ আসেনি।”
দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরাফাতুল আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পানিবন্দি মানুষের জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদ আছে। আশ্রয়কেন্দ্রে যারা এসেছেন, তাদের রান্না করে খাওয়ানো হচ্ছে।”
কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে খাগড়াছড়ির পাশাপাশি বন্দর নগরী চট্টগ্রাম ও পার্বত্য জেলা বান্দরবন শহরসহ বিভিন্ন এলাকা ডুবে ব্যাপক দুর্ভোগ তৈরি হয়েছে।
খাল-জলাশয় উপচে চট্টগ্রামের ১৩টি উপজেলার প্রায় তিন লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। সোমবার রাত পর্যন্ত চট্টগ্রামের ১৫টি উপজেলার মধ্যে দক্ষিণের সাতকানিয়া, বাঁশখালী, পটিয়া ও আনোয়ারা এবং উত্তরের রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, সীতাকুণ্ড, মীরসরাই, হাটহাজারী ও ফটিকছড়ির পানিতে তলিয়ে যাওয়া এলাকার পরিমাণ বেশি।
এছাড়া চন্দনাইশ, বোয়ালখালী ও সন্দ্বীপের কিছু এলাকার মানুষও পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
অন্যদিকে পাহাড়ি ঢলে সাঙ্গু নদী ফুলেফেঁপে বান্দরবান শহর পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। কিছু কিছু জায়গায় পাহাড় ধসের কারণে জেলা থেকে উপজেলা ও দূরপাল্লার সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
এই অবস্থায় বান্দরবান ‘কার্যত বিচ্ছিন্ন’ হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন জায়গায় মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। এ ছাড়া জেলা শহরের অনেক মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে হোটেলে ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে।
জেলার কোথাও কোথাও শনিবার রাত থেকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। জেলা শহরে রোববার থেকে কোনো বিদ্যুৎ নেই। ইন্টারনেট সেবা বিঘ্নিত হওয়ায় যোগাযোগের ক্ষেত্রেও সমস্যা হচ্ছে।
আরও পড়ুন-
থৈ থৈ পানিতে ‘বিচ্ছিন্ন’ বান্দরবান, আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষ
নগরী ছাড়িয়ে দুর্ভোগ গ্রামেও, চট্টগ্রামে পানিবন্দি ৩ লাখ মানুষ