গাইবান্ধা প্রমাণ করেছে সরকারের অধীনে ভোট সুষ্ঠু হয় না: ফখরুল

এ সময় তিনি ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট নিয়েও কথা বলেন।

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Oct 2022, 03:16 PM
Updated : 13 Oct 2022, 03:16 PM

দলীয় সরকারের অধীনে কখনও কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হয় না সেটা গাইবান্ধার উপ-নির্বাচনে প্রমাণ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

‘অনিয়মের’ কারণে গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচন স্থগিতের একদিন বাদে বিএনপি নেতা বলেন, “সেখানে সমস্ত শক্তি নিয়োগ করেও বর্তমান নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করতে না পারার কারণে নিজেরাই নির্বাচন বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা যে কথাটা সবসময় বলে আসছি এই নির্বাচনের মাধ্যমে সেটাই প্রমাণিত হলো।”

“সুতরাং নির্বাচনে কী হল না হল এটা নিয়ে আমাদের কোনো আগ্রহ নেই।”

বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির কার্যালয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।

ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুতে শূন্য হওয়া এ আসনে বুধবার সকাল ৮টা থেকে ১৪৫ কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট গ্রহণ করছিল নির্বাচন কমিশন।

গোপন কক্ষে অবৈধভাবে একাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, একজনের ভোট আরেকজন দিয়ে দেওয়াসহ বিভিন্ন ঘটনা দেখার পর বেলা ১টা পর্যন্ত কয়েক দফায় অর্ধশত কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। এরপর ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায়’ দুপুর আড়াইটার দিকে পুরো ভোটই স্থগিত করে দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।

গাইবান্ধার উপ-নির্বাচন কী বার্তা দিলো একজন সাংবাদিক জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব বলেন, “এই নির্বাচন এই বার্তা দিয়েছে যে, দলীয় সরকারের অধীনে মানে আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না; নিরপেক্ষ হতে পারে না।”

মির্জা ফখরুল বলেন, “আমাদের আগ্রহ একটাতেই। শুধু নির্বাচনের পদক্ষেপ নয়, নির্বাচন ব্যবস্থা নয়, যারা সমগ্র দেশের গণতন্ত্রকে হরণ করেছে; রাষ্ট্রকে যারা আজকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে, তাদেরকে সরিয়ে একটা সত্যিকার অর্থে তত্ত্বাবধায়ক অথবা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের মধ্য দিয়ে নির্বাচন করতে হবে। এটাই একমাত্র পথ বলে আমরা মনে করি।”

তিনি আরও বলেন, “এসব কারণে আমরা আমাদের আন্দোলন শুরু করেছি। বুধবার চট্টগ্রামের আমাদের মহাসমাবেশ হয়েছে, এটিই আমাদের আন্দোলনের দ্বিতীয় ধারা। চট্টগ্রামের লাখো মানুষের যে সমাবেশ হয়েছে, সেই সমাবেশ থেকে বাংলাদেশের মানুষের জন্য চট্টগ্রামের মানুষ বার্তা দিয়েছে যে, এখনই এই সরকার পতনের আন্দোলন শুরু হলো। এখান থেকেই সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়বে। অল্প সময়ের মধ্যে সরকারের পতন হবে।”

সাংবাদিকদের ওপর বিরাট একটা খড়গ এসেছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, “একটা নতুন সার্কুলার দিয়েছে সরকার। ২৯টি বিভাগ ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের ১৫ ধারাতে নিয়ে আসা হলো। সেই ২৯টি বিভাগ হচ্ছে বাংলাদেশের রাষ্ট্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ।”

“এর অর্থ কী? এর অর্থ হচ্ছে, এই বিভাগগুলো সম্পর্কে সাংবাদিকরা ইচ্ছ করলেই কোনো প্রশ্ন করতে পারবেন না; অথবা এসব বিভাগগুলোর যেসব ওযেবসাইট আছে, অর্থাৎ ভেতরে যেসব খবরগুলো আছে সেগুলো সাংবাদিকরা দিতে পারবেন না।”

এ সময় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, সহসভাপতি নুর করিম উপস্থিত ছিলেন।