বাবার কাছে বিচার দেওয়ার জেরে রনি মেয়েটি প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার পথে জোরপূর্বক তাকে পাশের একটি বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।
Published : 12 Mar 2023, 01:40 PM
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায় ইভটিজিংয়ে বাধা দেওয়া ও প্রতিবাদ করার জের ধরে সংর্ঘষে ছেলে ও মেয়ের বাবাসহ ১০জন গুরুতর আহত হয়েছেন।
শনিবার সন্ধ্যার দিকে উপজেলার ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের রাবাইটারী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান ফুলবাড়ি থানার ওসি ফজলুর রহমান।
৯ম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থীর স্বজনদের অভিযোগের বরাতে ওসি ফজলুর রহমান জানান, রনি মিয়া (২০) নামে এক শিক্ষার্থী দীর্ঘদিন ধরে একই এলাকার হিন্দু ধর্মাবলম্বী ৯ম শ্রেণির ছাত্রীকে দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার সময় ফুল ও চিঠিপত্র দিত এবং বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ কথা বলত।
৯ম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থী এর প্রতিবাদ করে বিষয়টি তার বাবাকে জানালে তিনি রনির বাবা মো. হাছেন আলীকে তা জানান।
এতেই রনি ক্ষিপ্ত হয়ে শনিবার বিকাল সাড়ে ৫টায় প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সময় মেয়েটিকে জোরপূর্বক পাশের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় মেয়েটির চিৎকারে তার জ্যাঠাত ভাই ঘটনাস্থলে এসে এর প্রতিবাদ করে।
এ সময় খবর পেয়ে দুই পরিবারের অন্যরা এগিয়ে এলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের বাবা, ভাই ও নিকট আত্মীয়সহ ১০ জন গুরুতর আহত হন।
তারা ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
মেয়েটির জ্যাঠাত ভাই বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে আমার বোনকে অভিযুক্ত রনি প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে বিরক্ত করছিলো। দুদিন আগে তাকে শাসন করার জন্য আমরা তার বাবার কাছে বিচার দিয়েছিলাম। সেই জেরে শনিবার সন্ধ্যার দিকে তারা আমাদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।”
এদিকে গুরুতর অসুস্থ থাকায় এ বিষয়ে রনির বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
তবে রনির মা নাজমা বেগম মুঠোফোনে বলেন, “আমার ছেলে এবার এইচএসসি পরীক্ষা দেবে। ওই মেয়ের সাথে তার কোনো সম্পর্ক নাই। তারাই বিকালের দিক ফোনে ডেকে নিয়ে রড দিয়ে আমার ছেলের মাথায় মারে, সে হাসপাতালে ভর্তি। ”
তিনি বলেন, “আমরা বাধা দিতে গেছি, আমাকেও মারছে। আমরা এর বিচার চাই।”
ভাঙ্গামোড় ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলী শেখ বলেন, “ঘটনাটি লোকমুখে শুনেছি। তবে যতদূর মনে হলো ছেলে-মেয়ের উভয়ের মধ্যে সম্পর্ক ছিলো। আমরা বিষয়টি দেখছি।”
ফুলবাড়ী উপজেলা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অনিল চন্দ্র বলেন, “আসলে বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর। দুই সম্প্রদায়ের দুইটি পরিবারের মধ্যে এরকম সংঘর্ষের ঘটনাটি দুঃখজনক। আমরা বিষয়টি থানাকে অবহিত করেছি।”
এ ব্যাপারে ওসি ফজলুর রহমান বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।