এ সময় ইউএনও-পুলিশ চেষ্টা করেও বহিরাগতদের সরাতে পারেননি বলে জানিয়েছে প্রত্যক্ষদর্শীরা।
Published : 30 Jan 2024, 03:44 PM
কুমিল্লার তিতাস উপজেলা পরিষদের সভায় এক যুবলীগ নেতার নেতৃত্বে বহিরাগতরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যানসহ কয়েকজনকে কিলঘুষি মারার ঘটনা ঘটে।
হামলায় সোমবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদের অডিটোরিয়ামে শুরু হওয়া মাসিক সাধারণ সভাটি পণ্ড হয়ে যায়।
পরে রাতে এ ঘটনার ২ মিনিট ১১ সেকেন্ডের একটি সিসিটিভির ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়।
ওই সভায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পারভেজ হোসেন সরকার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাজমুল হাসান, সহকারী কমিশনার (ভূমি), থানার ওসিসহ বিভিন্ন দপ্তরের সরকারি কর্মকর্তা এবং জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। তাদের উপস্থিতিতে এমন হামলার ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
হামলায় মারধরের শিকার উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ফারহাদ আহমেদের ভাষ্য, “কুমিল্লা উত্তর জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার হোসেন বাবু ও তিতাস উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কামরুজ্জামান তুষারের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন বহিরাগত সন্ত্রাসী এই হামলা চালিয়েছে।”
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন যুবলীগ নেতা সারোয়ার হোসেন বাবু।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, সোমবার সকাল ১১টার দিকে তিতাস উপজেলা পরিষদের মাসিক সাধারণ সভা শুরু হয়। পরে ১১টা ৩৯ মিনিটের দিকে বেশ কিছু বহিরাগত লোকজন অডিটোরিয়ামে প্রবেশ করেন। বহিরাগতরা সভাকক্ষে প্রবেশের পর হৈ-হুল্লোড় শুরু হয়। এ সময় তৈরি হয় হট্টগোল, শুরু হয় হাতাহাতি, কিলঘুষি মারা। এর ফলে সভাটি পণ্ড হয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী জানান, সারওয়ার হোসেন বাবুর নেতৃত্বে কামরুজ্জামান তুষারসহ ২০ থেকে ৩০ জন এসে এই হামলা চালায়। এ সময় উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান, বলরামপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, সাতানী ইউনিয়ন চেয়ারম্যানসহ পাঁচজনকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারেন তারা।
এ সময় ইউএনও-পুলিশ চেষ্টা করেও বহিরাগতদের সরাতে পারেননি।
ভাইস চেয়ারম্যান ফারহাদ আহমেদ বলেন, “আমার ওপর যারা হামলা করেছে, তাদের কারো সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব বা পূর্ববিরোধ নেই। মূলত নিজেদের আধিপত্যের বিষয়টি জাহির করতেই এমন হামলা চালিয়েছে। এ ছাড়া গত বছর ১৫ অগাস্টও সারওয়ার হোসেন বাবু বিদায়ী ইউএনওকে হুমকি দিয়েছিলেন।”
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে যুবলীগ নেতা সারওয়ার হোসেন বাবু বলেন, “হামলা ও আমার বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ সঠিক নয়। আমি কোনো হামলা চালাইনি। ওই সভায় বসে নেতাদের বিরুদ্ধে কটূক্তি করায় ছেলেরা প্রতিবাদ করেছে। আমি গিয়ে তাদের সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেছি।”
তিতাস থানার ওসি কাঞ্চন কান্তি দাস বলেন, “এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কার্যালয়ের অফিস সহকারী নেছার উদ্দিন বাদী হয়ে একটি অভিযোগ দাখিল করেছেন। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হামলাকারীদের ছাড় দেওয়া হবে না।”
মঙ্গলবার এ বিষয়ে কথা বলতে তিতাস উপজেলা চেয়ারম্যান পারভেজ হোসেন সরকার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাজমুল হাসানের মোবাইলে একাধিকবার কল করলেও তারা রিসিভ করেননি।