সকাল থেকেই শ্রমিকরা নিয়মমাফিক কারখানায় প্রবেশ করে কাজে যোগ দিয়েছিলেন। পরে কাজ বন্ধ করে তারা বেরিয়ে পড়েন।
Published : 09 Nov 2023, 02:08 PM
মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখিয়ে বেরিয়ে পড়লে ঢাকার আশুলিয়ায় অর্ধশতাধিক পোশাক কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে নিয়মমাফিক কাজে যোগ দেয়ার পর ফের বেরিয়ে পড়েন ওই এলাকার বেশ কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা। এর পরপরই ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের উভয় পাশের পোশাক কারখানাগুলোয় একদিনের ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।
তবে সড়কে কোনো প্রকার আন্দোলন করতে দেখা যায়নি শ্রমিকদের। কিন্তু যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম জানান, সকালে ৫-৬ টি কারখানার শ্রমিকরা বের হয়েছে। এরপর সড়কের পাশের কারখানাগুলো ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এছাড়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ন্যূনতম ২৩ হাজার বেতনের দাবিতে পোশাক কারখানার শ্রমিকদের চলমান আন্দোলনের মধ্যে মঙ্গলবার সাড়ে ১২ হাজার টাকা মজুরি ঘোষণা করে সরকার। কিন্তু তা প্রত্যাখান করে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখে শ্রমিকরা।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই স্বাভাবিক নিয়মেই শ্রমিকরা কারখানায় প্রবেশ করে কাজে যোগদান করেছিলেন।
পরে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আশুলিয়ার জামগড়া ছয় তলা এলাকার এএম ডিজাইন লিমিটেড ও এনভয় কারখানার শ্রমিকরা মজুরী বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে কাজ বন্ধ করে কারখানা ত্যাগ করেন।
পরে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের জামগড়া, নরসিংহপুর, বেরন এলাকার শ্রমিকরাও কারখানা থেকে বেরিয়ে পড়েন।
জামগড়া এলাকার ভার্চুয়াল গামের্ন্টেসের অপারেটর মোসাম্মত লাইলী বলেন, “সরকার ১২ হাজার ৫০০টাকা নির্ধারণ করেছে সেটা হেলপারদের জন্য। আমরা যে অপারেটর- আমাদের বেতন বাড়েনি। হিসেব অনুযায়ী আমাদের বেতন ডাবল হওয়ার কথা। কিন্তু আমাদের বেতন বাড়েনি। তাই আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি।
এদিকে আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সড়কে র্যাব, পুলিশ ও শিল্প পুলিশের পাশাপাশি বিজিবির সদস্যরা রয়েছেন সতর্ক অবস্থানে। কিছুক্ষণ পর পরই তাদের টহল দিতে দেখা গেছে। এ ছাড়া সড়কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশের সাথে আনসার সদস্যরাও রয়েছেন।
বাংলাদেশ গামের্ন্ট ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইন বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু বলেন, “সকালে শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণভাবে কাজে যোগদান করে। কিন্তু কাজে যোগদানের কিছু সময় পরেই কয়েকটা গামের্ন্টেসের শ্রমিকরা কারখানা থেকে বেরিয়ে পড়ে।’
মিন্টু আরও বলেন, “সরকার যে মজুরি বাড়িয়েছে সেটা নতুনদের জন্য। এখন পুরাতন অপারেটর যারা আছে তারা বলছে তাদের বেতন বাড়েনি। এখন মূলত তারাই আন্দোলনটা করছে।”
সরকার ঘোষিত ন্যূনতম মজুরি পুর্ননির্ধারণের জন্য তাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে একটি আবেদন দুপুরে শ্রম মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান এই শ্রমিক নেতা।
তবে শ্রমিকদের দাবি ও আন্দোলনের বিষয়ে একাধিক কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলার চেষ্টা করলেও কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।