বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশের মরদেহ উদ্ধারের ৪৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনও পরিবার মামলা করেনি।
ফারদিনের পরিবারের লোকজন বলছে, ফারদিনের সর্বশেষ অবস্থান ছিল রামপুরা থানায়। ওই থানায় সাধারণ ডায়েরিও করা হয়েছিল। তবে তার লাশ মিলেছে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদী থেকে। কোন থানায় মামলা করবেন তা নিয়ে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে আলোচনা চলছে।
তিন দিন নিখোঁজ থাকার পর সোমবার বিকালে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিনের মরদেহ উদ্ধার করে নৌ-পুলিশ৷
তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন; পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন।
মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ফারদিনের ময়নাতদন্ত হয়। পরে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক শেখ ফরহাদ সাংবাদিকদের জানান, ফারদিন নূর পরশকে হত্যা করা হয়েছে।
পরিবার জানায়, ফারদিন শুক্রবার বাসা থেকে বের হয়েছিল বুয়েট ক্যাম্পাসে যাবার উদ্দেশে৷ পরদিন (শনিবার) পরীক্ষা শেষে বাসায় ফিরবে বলে জানিয়েছিল৷ কিন্তু শুক্রবার রাত ১১টার পর থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়৷
পুলিশ বলছে, ফারদিনকে শেষ দেখা গেছে রামপুরায়, তার মোবাইল ফোনটি তারপর এগিয়েছে সদরঘাটের দিকে, সর্বশেষ জানা অবস্থান কেরানীগঞ্জে; আর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইলে বর্ণালী টেক্সটাইল মিলের ঘাটের পাশে শীতলক্ষ্যা নদীতে।
নারায়ণগঞ্জ সদর নৌ-পুলিশের ওসি মো. মনিরুজ্জামান বলেন, “নিহতের মরদেহ পাওয়া গেছে শীতলক্ষ্যা নদীতে। ওই স্থানটি সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অধীনে। আবার তার সর্বশেষ লোকেশন ছিল রামপুরা থানা এলাকায়। সেখানে জিডিও হয়েছে। যেকোনো থানাতেই মামলা করার সুযোগ রয়েছে।”
বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মশিউর রহমান বলেন, “মরদেহ উদ্ধারের পর থেকেই নিহতের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় আছে। তবে তারা এখন পর্যন্ত থানায় এসে কোনো এজাহার দেননি। এজাহার দিলেই মামলা নেওয়া হবে।”
রামপুরা থানার ওসি কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, “এই থানায় নিখোঁজের জিডি হয়েছিল। আমরা জিডির সূত্র ধরে তদন্ত করেছি। পরে লাশ উদ্ধার হলো নারায়ণগঞ্জে। সকালেও নিহতের বাবার সঙ্গে কথা হয়েছে। কিন্তু তাদের পরিবারের কেউ থানায় আসেননি। হয়তো তারা মামলা নারায়ণগঞ্জেও করতে পারেন।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিহত ফারদিনের বাবা নূরউদ্দিন রানা বলেন, “আমরা পারিবারিকভাবে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি। কোথায় মামলা করলে তদন্তের সুবিধা হবে সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত হলে মামলা করবো।
“আমরা চাই, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আমার ছেলের হত্যার আসামিদের চিহ্নিত করা হোক। ছেলেকে তো আর ফিরে পাবো না, আসামিদের শাস্তিই একমাত্র চাওয়া।”
আরও পড়ুন: