মাদারীপুরে এক সাংবাদিকের করা চাঁদাবাজি ও মানহানির মামলায় যুবলীগ নেতা ও তার দুই সহযোগীকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
মঙ্গলবার দুপুরে মাদারীপুরের বিচারিক হাকিম কেএম আলমগীর হোসেন এ আদেশ দেন বলে ওই সময় আদালতে উপস্থিত থাকা মাদারীপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি গোলাম মাওলা আকন্দ জানান।
আসামিরা হলেন- জেলা যুবলীগের সহ-সম্পাদক ও সদর উপজেলার পৌর পেয়ারপুরের বাসিন্দা সুমন তালুকদার (৪২), একই এলাকার সালমান রেজা ওরফে সাদ্দাম বেপারী (২৯) ও শফিউল আলম ওরফে লিটন তালুকদার (৪৩)।
মামলার নথি থেকে জানা গেছে, কিছুদিন ধরে দৈনিক ‘সকালের সময়’ পত্রিকার মাদারীপুর জেলা প্রতিনিধি এসএম আরাফাত হাসানের সঙ্গে জেলা যুবলীগের সুমন তালুকদারের বিরোধ চলছিল। গত ৭ এপ্রিল বিকালে নতুন শহর এলাকায় মৈত্রী মিডিয়া সেন্টার নামে আরাফাতের অফিসে প্রবেশ করেন সুমন তালুকদার ও সহযোগিরা। এ সময় তারা দেশীয় অস্ত্র দেখিয়ে আরাফাত হাসানের কাছে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে হত্যার হুমকি ও ভয়ভীতি দেখান সুমন ও তার সহযোগীরা।
মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, পরে সেখান থেকে চলে গিয়ে ‘মাদারীপুর ক্রাইম’ নামের একটি ফেইসবুক পেইজ ও ‘মাদারীপুর ক্রাইম’ নামের ফেইসবুক আইডির মাধ্যমে আরাফাত হাসানের বিরুদ্ধে মানহানিকর বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়িয়ে দেন আসামিরা।
এ ঘটনায় গত সোমবার (১৫ মে) আরাফাত হাসান বাদী হয়ে সুমন তালুকদার ও তার দুই সহযোগীর নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১৫/২০ জনকে আসামি করে সদর থানায় চাঁদাবাজিসহ কয়েকটি ধারায় মামলা করেন।
মঙ্গলবার দুপুরে এজাহারনামীয় আসামিরা আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন। পরে উভয় পক্ষের আইনজীবীর মাধ্যমে শুনানি শেষে ওই তিনজনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাকিদের ধরতেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেয় আদালত।
মাদারীপুর সদর মডেল থানার ওসি মনোয়ার হোসেন চৌধুরী জানান, সাংবাদিক আরাফাত হাসানের মামলায় বাকি অজ্ঞাতনামা আসামিদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে। এ ছাড়া জেল-হাজতে পাঠানো আসামিদের প্রয়োজনে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে ঘটনার আসল রহস্য ও তথ্য বের করা হবে।
মামলার বাদী এসএম আরাফাত হাসান বলেন, “ আমার কাছে চাঁদা দাবি ও সামাজিক মাধ্যমে মিথ্যা বানোয়াট ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে সুনামহানি করার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেছি। আমি আশা করি, এ ঘটনায় যারা যারা জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় এনে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করবে প্রশাসন।”
এ বিষয়ে মাদারীপুর জেলা যুবলীগের সভাপতি আতাহার সরদার বলেন, “মামলায় কারাগারে পাঠানোর খবর পেয়েছি। অভিযুক্ত সুমন তালুকদারের সাজা হলে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি মূলত আমাদের যুবলীগ করলেও অন্য এক নেতার কর্মী।”