এ ছাড়া অতিভারী বৃষ্টির কারণে নগরীসহ আশপাশের নিম্নাঞ্চলে পানি জমে গেছে।
Published : 17 Nov 2023, 09:18 PM
ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে দমকা বাতাসে বৈদ্যুতিক তারে গাছের ডাল পড়ে বরিশাল নগরীর অর্ধেক এলাকা বিদ্যুতবিহীন হয়ে পড়েছে।
বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ওজোপাডিকোর বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফারুক হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, তার অধীনে ১৬ ফিডারের মাধ্যমে ৬৫ হাজার গ্রাহককে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। শুক্রবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টা পর্যন্ত ৪০ ভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে। বাকি গ্রহকদের বিদ্যুৎ সরবরাহে কাজ চলছে।
বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মঞ্জুরুল ইসলাম জানান, তার ফিডারে ৬৪ হাজার গ্রাহক আছেন। এর মধ্যে সন্ধ্যা সোয়া ৭টা নাগাদ ৭০ ভাগ গ্রাহকের বিদ্যুৎ চালু করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, বিভিন্ন এলাকায় বৈদ্যুতিক তারে গাছের ডাল-পালা অপসারণের কাজ চলছে। রাত ১০টার মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করা যাবে।
এদিকে, বরিশাল আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক বশির আহমেদ জানান, বিকাল ৩টা পর্যন্ত বরিশালে ২১৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
মিধিলার প্রভাবে বরিশালে সর্বোচ্চ ৫৫ কিলোমিটার গতিবেগে বাতাস বয়। বর্তমানে বৃষ্টিপাত ও বাতাস বন্ধ হয়েছে।
তিনি আরো জানান, আকাশ মেঘলা রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে তাপমাত্রাও হ্রাস পেয়েছে। বরিশালে শুক্রবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা।
নগরীর ভাটিখানা এলাকার বাসিন্দা শাহ মুনির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, বৃহস্পতিবার বিকালের পর থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। শুক্রবার ভোর থেকে মাঝারি ও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঝড়ো বৃষ্টি হয়। বিকাল ৩টা পর্যন্ত অঝোর ধারায় বৃষ্টি নামে। এতে ভাটিখানা এলাকায় হাঁটু পানি জমে যায়।
সবচেয়ে বেশি পানি উঠেছে নগরীর বটতলা থেকে হাতেম আলী কলেজ চৌমাথা পর্যন্ত সড়কে।
এছাড়া এ সড়কের আশপাশের এলাকায় কোমর পর্যন্ত পানিতে ডুবে রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী পারভেজ রুবেল জানান, এ সড়কে মানুষ জাল দিয়ে মাছ শিকারে মেতে উঠেছে। শিশুরা সাঁতার কেটেছে। এ সড়কের আশপাশের অলি-গলিও পানি ডুবে কয়েক হাজার বাসিন্দা পানি বন্দী হয়ে পড়েছে।
এছাড়া নগরীর সদর রোড, ফজলুল হক এভিনিউ, কেডিসি রোড, অক্সফোর্ড মিশন রোড, কালুশাহ সড়ক, বগুড়া রোড, ফকিরবাড়ি রোড, মল্লিক রোড, বাংলাদেশ ব্যাংক গলি, শ্রীনাথ চ্যাটার্জি লেনের বাসিন্দা পানিবন্দি অবস্থায় আছে।
অতিভারী বৃষ্টির কারণে নগরীসহ আশপাশের নিম্নাঞ্চলে পানি জমে গেছে। নগরবাসীকে জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষায় কাজ করছে সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা।
করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বলেন, “কীর্তনখোলা নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে বৃষ্টির পানি কম নামে। নদীর পানি কমে গেলে নগরীর জলাবদ্ধতা কমে যাবে। নগরীর ড্রেনের ময়লা আবর্জনা অপসারণ করে পানি নামার গতি বাড়ানোর জন্য পাঁচশত পরিচ্ছন্নতা কর্মী কাজ করছে।”
এদিকে, বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্যে অনুযায়ী কীর্তনখোলা নদীর পানির বিপজ্জনক সীমা হচ্ছে ২.১৪ মিটার। কিন্তু সন্ধ্যা ৬টায় পানির স্তর ছিল ১.১৩ মিটার।