ছয় দিন আগে বিঝু উৎসব শেষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরা পথে খাগড়াছড়ি থেকে ওই পাঁচ শিক্ষার্থী অপহরণের শিকার হন।
Published : 22 Apr 2025, 05:36 PM
খাগড়াছড়ি থেকে অপহৃত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীর মুক্তির দাবিতে রাঙামাটি সরকারি কলেজে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
সমাবেশে পিসিপি রাঙামাটি সরকারি কলেজ শাখার সভাপতি সজল চাকমার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জ্ঞান চাকমার সঞ্চালনায় কলেজ শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক করুন জ্যোতি চাকমা, সহসভাপতি সচিব চাকমা এবং হিল উইমেন্স ফেডারেশন কলেজ কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সূচনা চাকমা বক্তব্য দেন।
করুন জ্যোতি চাকমা বলেন, “বিভিন্ন মহল থেকে বারবার দাবি জানানো সত্ত্বেও ইউপিডিএফ অপহৃত শিক্ষার্থীদের মুক্তি দিচ্ছে না। এতে পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়ে যাচ্ছে। নিরাপত্তা বাহিনী উদ্ধার অভিযানের নামে বিভিন্ন জায়গায় সাধারণ জনগণকে হয়রানি করছেন।
“এর দায় ইউপিডিএফকে নিতে হবে। মেধাবী প্রজন্মকে এভাবে অপরাজনীতির ‘বলির পাঠা’ বানিয়ে জাতি কয়েকশত বছর পিছিয়ে যাবে। এর জন্য ইউপিডিএফকে জনগণের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। এ ঘটনায় পুরো জুম্ম জাতি লজ্জিত।”
হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সূচনা চাকমা বলেন, “অপহরণের পর ছয় দিন পেরিয়ে গেছে। চারিদিকে তুমুল প্রতিবাদ হচ্ছে। তবুও শিক্ষার্থীদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে না।
“অপহৃতদের মা-বাবা ও আত্মীয় স্বজনেরা গভীর উৎকণ্ঠায় দিনাতিপাত করছেন। অপহৃত শিক্ষার্থীদের অক্ষত অবস্থায় দ্রুত মুক্তির দাবি করছি।”
খাগড়াছড়িতে খোঁজ মেলেনি অপহৃত ৫ শিক্ষার্থীর, পরিবারের উদ্বেগ
পার্বত্য চট্টগ্রামে কারোই নিরাপত্তা নেই অভিযোগ করে পিসিপি নেতা সজল চাকমা বলেন, “একদিকে ‘অপারেশন উত্তরণ’ এর নামে সেনা শাসন, আরেকদিকে চুক্তিবিরোধী বিভিন্ন গোষ্ঠীর অপতৎপরতায় পার্বত্য চট্টগ্রামের কার্যত কারাবন্দি।
“আজকে ছয় দিন পার হয়ে গেলেও অপহৃত পাঁচ শিক্ষার্থীর কোনও হদিস নেই। তারা কোথায় আছেন? কীভাবে আছেন, আমরা জানতে পারছি না।”
অনতিবিলম্বে অপহৃত শিক্ষার্থীদের সুস্থ শরীরে ও বিনা শর্তে মুক্তি দেওয়া না হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন পিসিপির এই নেতা।
বুধবার ভোর সাড়ে ৬টায় বিঝু উৎসব শেষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরা পথে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার গিরিফুল এলাকা থেকে অপহরণের শিকার হয় পাঁচ শিক্ষার্থী।
পাঁচ শিক্ষার্থীর মুক্তি চেয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ‘আদিবাসী’দের বিবৃতি
'বিঝু' শেষে ফেরার পথে চবির ৫ শিক্ষার্থী 'অপহরণ', ইউপিডিএফের অস্বীকার
অপহৃত শিক্ষার্থীরা হলেন- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী অলড্রিন ত্রিপুরা, মৈত্রীময় চাকমা, নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী দিব্যি চাকমা, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী রিশন চাকমা এবং প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী লংঙি ম্রো। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
এর মধ্যে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী রিশন চাকমা পিসিপির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার একজন সদস্য।
এ ঘটনায় ইউপিডিএফকে (প্রসীত) দায়ী করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) এর কেন্দ্রীয় সভাপতি নিপুণ ত্রিপুরা।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইউপিডিএফের মুখপাত্র অংগ্য মারমা। তিনি বলেন, এ ঘটনায় তাদের কোনও সম্পৃক্ততা নেই।