লোকলজ্জার ভয়ে ভুক্তভোগীর মা আইনি জটিলতায় না গিয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েতের মাধ্যমে এ ঘটনার প্রতিকার করতে চেয়েছিলেন।
Published : 12 Mar 2025, 05:57 PM
নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় এক তরুণকে ধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে৷
মঙ্গলবার বন্দর থানায় মামলাটি হয়েছে বলে জানান ওই থানার ওসি তরিকুল ইসলাম৷
২০ বছর বয়সী ওই তরুণ স্থানীয় একটি হোসিয়ারি কারখানায় কাজ করেন৷ এই ঘটনায় মামলার আসামি ৪০ বছর বয়সী ব্যক্তি তার প্রতিবেশী ছিলেন। তিনি পলাতক।
পরিবার ও স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, ভুক্তভোগী তরুণ সহজ-সরল প্রকৃতির৷ গত ৮ ফেব্রুয়ারি তিনি ধর্ষণের শিকার হন। তবে, ভয়ে বিষয়টি কাউকে জানাননি তিনি৷ পরে শারীরিক জটিলতা দেখা দিলে তিনি তার মাকে বিষয়টি জানান৷
ভুক্তভোগী তরুণের মা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “চার বছর আগে আমার স্বামী মারা গেছেন। বড় ছেলেও মারা গেছে নৌকাডুবিতে৷ আমার ছোট পোলাডা একেবারে সহজ-সরল৷ সে এ দুনিয়ার জিনিসপত্র খুব একটা বোঝে না৷
“হোসিয়ারিতে কাজ দিছি, সেই কাজও ঠিকমত করতে পারে না৷ তার সাথে যে খারাপ কাজ হইছে ভয়ে এইটা কাউরে বলেও নাই৷ যখন অতিরিক্ত রক্ত পড়তেছিল তখন আমারে কইছে৷”
তবে লোকলজ্জার ভয়ে এই নারী আইনি জটিলতায় না গিয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েতের মাধ্যমে এ ঘটনার প্রতিকার চান৷
পরে সোমবার রাতে সালিশ বসলে সেখানে উপস্থিত হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন সংগঠক৷ পরে সেখানে স্থানীয় বিএনপি ও ছাত্র নেতাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে৷ পরে খবর পেয়ে থানা পুলিশ সেখানে যায়৷
বন্দর থানার ওসি তরিকুল বলেন, “হাতাহাতির অভিযোগ পেয়ে সেখানে গেলে পুলিশ ধর্ষণের বিষয়টি জানতে পারে৷ এদিকে, সুযোগ পেয়ে অভিযুক্ত পালিয়ে যায়৷ পরে ভুক্তভোগী ও তার মায়ের কাছে ঘটনার বিস্তারিত শুনে মামলা নেওয়া হয়৷”
ভুক্তভোগী প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে বলেও জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা৷
ভুক্তভোগীর মা আরও বলেন, “লোক-লজ্জার ভয়ে আমি থানায় যাই নাই৷ গোপনে পঞ্চায়েতের মাধ্যমে সমাধান চাইছিলাম৷ কিন্তু সেই জানাজানি তো হইলোই৷
“আমি শরমে এখন ঘর থেইকা বাইর হইতে পারি না৷ কিন্তু আমি এর বিচার চাই”, কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলছিলেন তিনি৷
এ ঘটনায় মামলার পলাতক আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশ সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানান ওসি তরিকুল৷