বৈশ্বিক মন্দায় আমাদের খুব একটা সমস্যা হবে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

“কেয়ামত পর্যন্ত চেষ্টা করলেও তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর আসবে না। ওই চ্যাপ্টার ক্লোজ হয়ে গেছে।”

সিলেট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Nov 2022, 03:21 PM
Updated : 6 Nov 2022, 03:21 PM

বৈশ্বিক মন্দার কারণে দেশের মানুষের ‘হয়তো একটু কষ্ট হবে’, তবে ‘খুব একটা সমস্যা হবে না’ বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।

তিনি বলেন, “এখন পুরো বিশ্বই সঙ্কটে আছে, কেউ স্বস্তিতে নেই। তবে বৈশ্বিক মন্দা মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী দূরদর্শী পরিকল্পনা গ্রহণ করে রেখেছেন। তাই মন্দায় একটু হয়তো কষ্ট পাবো, তবে আমাদের খুব একটা সমস্যা হবে না। খাদ্যের কোনো ঘাটতি হবে না।”

রোববার সিলেট নগরীর কবি নজরুল অডিটরিয়ামে মহানগর আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন। 

এ সময় তিনি জানান, স্বল্প আয়ের মানুষের যাতে সমস্যা না হয় তার জন্য প্রায় দেড় কোটি মানুষকে টিসিবি এবং ৫০ হাজার লোককে বিজিবির মাধ্যমে ১৫ টাকা করে চাল দেওয়া হচ্ছে। এ কার্যক্রম আরও কয়েক মাস ধরে চলবে।”

মন্ত্রী বলেন, “আন্তর্জাতিকভাবে যেসব দেশ আগে বাংলাদেশকে পাত্তা দিতো না, তারাও এখন আমাদের সম্মানের চোখে দেখে। বিএনপি সমসময় বলে দেশে মানবাধিকার নেই। অথচ বাংলাদেশ এবার সর্বোচ্চ ভোটে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হয়েছে।”

নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির অধিকাংশ পূরণ হয়েছে দাবি করে মোমেন বলেন, “এই সরকারের আমলে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। তাই আবার আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনতে হবে। দেশের মঙ্গল ও নিজেদের অস্তিত্বের স্বার্থে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করতে হবে।”

সভায় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, “সংবিধান মেনে আগামী বছরের শেষদিকে জাতীয় নির্বাচন হবে। এর ব্যত্যয় হবে না। সবাইকে এই ব্যাপারে প্রস্তুতি নিতে হবে। আওয়ামী লীগকে আবার ক্ষমতায় আনতে হবে। দেশের অগ্রগতিকে অব্যাহত রাখার জন্য সরকার টিকিয়ে রাখতে হবে।“

বিএনপি মিথ্যাচার করছে অভিযোগ করে সংসদ সদস্য নাহিদ বলেন, “পদ্মা সেতু নিয়েও বিএনপি মিথ্যে প্রচার চালিয়েছিল। বলেছিল এ সেতু হবে না। কিন্তু শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছেন। বিএনপির মিথ্যাচার সত্ত্বেও দেশ এগিয়ে চলেছে। দেশ আজকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পুর্ণ। দারিদ্র্যতা দূরীকরণে বাংলাদেশ পুরো বিশ্বের কাছে এখন উদাহরণ।”

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, “আমরা এখন একটা ষড়যন্ত্রের মধ্যে আছি। এই দেশ নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। আমাদের ঐক্যই কেবল এই ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করতে পারে। ফলে বিভেদ ভুলে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। শেখ হাসিনা গণতন্ত্রকে সম্মান করেন। তিনি গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন। এ কারণেই মির্জা ফখরুলরা বাড়িতে ঘুমাতে পারছেন। গণতন্ত্র আছে বলেই আজ তারা সমাবেশ করতে পারছেন। কিন্তু বিরোধী দলে থাকার সময় আমরা বাড়িতে ঘুমাতে পারিনি।”

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, “শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে অভাবনীয় উন্নয়ন হচ্ছে। বিএনপির এটা সহ্য হচ্ছে না। তারা আবার ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। বিএনপির জন্মই হয়েছে ক্যান্টনমেন্টে অবৈধ পন্থায়, তারা আজ গণতন্ত্রের কথা বলে। এই দেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করেছেন জেনারেল জিয়া।”

তিনি আরও বলেন, “আজ বিএনপি বলে সরকার রিজার্ভ শেষ করে দিয়েছে। অথচ বিএনপির সময়ে রিজার্ভ ছিলো মাত্র তিন বিলিয়ন ডলার। আর এই সঙ্কটের সময়েও এখন আমাদের রিজার্ভ আছে ৩৮ বিলিয়ন ডলার।”

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন বলেন, “সময়মতো ও সংবিধান মেনেই নির্বাচন হবে। কেয়ামত পর্যন্ত চেষ্টা করলেও তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর আসবে না। ওই চ্যাপ্টার ক্লোজ হয়ে গেছে।”

“শেখ হাসিনা হবেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী। বিএনপি যতই লাফালাফি করুক কোনো লাভ হবে না। কেবল বক্তৃতা করলেই গণঅভ্যূত্থান হয় না।”

সভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম নাদেল, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. মুশফিক আহমদ চৌধুরী, আজিজুস সামাদ ডন, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান।