নারায়ণগঞ্জে ইন্টারনেট ব্যবসা ‘দখলে নিতে’ ছাত্রলীগ নেতার ‘হামলা-গুলি’

তবে হামলার বিষয়টি অস্বীকার করেন ওই ছাত্রলীগ নেতা।

নারায়ণগঞ্জে ইন্টারনেট ব্যবসা দখলে নিতে ব্যবসায়ীর বাড়িতে হামলা ও গুলি চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। 

জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসমাইল রাফেল প্রধান  ও তার ভাই অনুসারীদের শনিবার রাতে দু’দফা হামলায় চারজন আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ ওই ব্যবসায়ী পরিবারের৷ 

আহত হয়েছেন- নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের মাসদাইর এলাকার ইন্টারনেট ব্যবসায়ী ইফাদুর রহমান তুষার (৩২), তার বড়বোন শান্তা রহমান বৈশাখী (৩৬), মামা মতিন আহমেদ (৭০) ও কামাল আহমেদ (৬০)৷

শান্তা রহমান বলেন, “মাসদাইর এলাকায় তার ছোটভাই তুষারের ‘রান অনলাইন’ নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে৷ তিনি মাসদাইরসহ আশপাশের এলাকার ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার৷ একই এলাকায় ইন্টারনেটের ব্যবসা রয়েছে ছাত্রলীগ নেতা রাফেল ও তার ভাই রাসেলের৷ তারা তুষারের ব্যবসা দখলে নিতে চান৷ 

“গতকাল শুক্রবার রাফেলের লোকজন আমার ভাইয়ের ৩০ হাজার টাকার ইন্টারনেট লাইন কেটে দেয়৷ শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাফেল ও তার ভাই রাসেলের নেতৃত্বে অর্ধশত সন্ত্রাসী পিস্তল, ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে আমাদের বাড়িতে হামলা চালায়৷ ” 

শান্তা রহমান আরও বলেন, “আমার ভাইকে তারা রাস্তায় ফেলে বেধড়ক পেটায়৷ পরে রাত ৯টার দিকে আবারও তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী এসে আমাদের বাড়ির সামনে গুলি করে, বোমা ফাটায়৷  বৃষ্টির মতো ঢিল ছুড়ে আমাদের বাড়ির জানালার কাচ ভেঙে ফেলে৷ বাড়ির সামনে আমাদের ভাড়াটিয়ার একটা মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করে৷ বাধা দিলে আমাকে ও আমার দুই মামাকে তারা মারধর করে৷ আমার বড় মামার দিকে পিস্তল তাক করে গুলি করে দেওয়ারও হুমকি দেয় রাফেলের লোকজন৷ আমি মোবাইলে তাদের হামলার ভিডিও করেছিলাম৷ সেই মোবাইলটাও হামলাকারীরা ছিনিয়ে নিয়ে যায়৷”

স্থানীয় দুজন প্রত্যক্ষদর্শী পরিচয় গোপন রাখার শর্তে বলেন, তারা তিনটি গুলির শব্দ শুনেছেন এবং অন্তত দুবার ককটেল বিস্ফোরণের মতো শব্দ শুনেছেন৷ সন্ত্রাসীরা ইন্টারনেট ব্যবসায়ী তুষারের বাড়িতে ইটপাটকেল ছুড়ে মারতে থাকেন৷ এ সময় স্থানীয় লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়েন৷ 

ঘটনাস্থলের দুই বাড়ি পরে স্থানীয় কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের বাড়ি৷ 

তিনি বলেন, “ইন্টারনেট ব্যবসাকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি৷ আমি নিজেও ককটেলের মতো কিছু বিস্ফোরণ হয়েছে এমন শব্দ দুবার শুনেছি৷ ঘটনাস্থলে পুলিশ আসছে, তারা তদন্ত করছে৷” 

যোগাযোগ করা হলে হামলার বিষয়টি অস্বীকার করেন ছাত্রলীগ নেতা আশরাফুল ইসমাইল রাফেল৷ তবে এ বিষয়ে আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি৷ 

জানতে চাইলে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি রিজাউল হক দিপু বলেন, “খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়৷ পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে৷ গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ হয়েছে এমন কোনো আলামত এখন পর্যন্ত আমরা পাইনি৷ বিষয়টি নিয়ে পুলিশ তদন্ত করছে৷ আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন৷”