মামলার রায়ে কোনো পক্ষই সন্তুষ্ট নয়।
Published : 22 Jan 2025, 07:21 PM
মাদারীপুরের রাজৈরে এক দশক আগে একটি চাঁদাবাজির মামলার সাক্ষী ফল ব্যবসায়ী খুনের দায়ে পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
বুধবার বিকালে জেলার জ্যেষ্ঠ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারত নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবির এ রায় ঘোষণা করেন বলে আসামিদের পক্ষের আইনজীবী ফজুর রহমান হিরু জানান।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। যা অনাদায়ে তাদের আরো এক বছর করে সশ্রম কারাবাসে থাকতে হবে।
রায়ে ১৯ আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- ওই এলাকার সাহেবালী মুন্সি, খোকন মুন্সি, সাহাবুদ্দিন মুন্সি, লাবলু মুন্সি ও হান্নান মুন্সি।
মামলার নথি থেকে জানা গেছে, ২০১৪ সালে একটি চাঁদাবাজি মামলায় সাক্ষী করা হয় মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার শাখারপাড় গ্রামের ফল ব্যবসায়ী বাবুল হাওলাদারকে। এরই জেরে ২০১৫ সালের ৪ জানুয়ারি বাবুলকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ঘটনার দুইদিন পর ৪২ জনের নামে রাজৈর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন নিহতের বড় ছেলে ইমরান হাওলাদার।
মামলার পর ইমরানকে বিভিন্ন সময় ভয়ভীতি দেখায় আসামিপক্ষ। পরে তিনি বিদেশে চলে যান।
এরপর উচ্চ আদালতের নির্দেশে মামলা পরিচালনার দায়িত্ব পান নিহতের ছোট ছেলে আসাদুল হাওলাদার।
সর্বশেষ তৃতীয় দফায় ২০১৬ সালের ২৪ মে ২৭ জনের মধ্যে আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন সহকারী পুলিশ সুপার মো. মনিরুজ্জামান ফকির।
মামলা চলাকালীন অভিযোগপত্রভুক্ত তিন আসামির মৃত্যু হয়। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ায় ১২ জনের সাক্ষ্য নেয় আদালত।
মামলার রায়ের সময় হান্নান মুন্সি ছাড়া সাজাপ্রাপ্ত চার আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
পরে তাদের জেল হাজতে পাঠানো হয়।
এদিকে, রায়ে ক্ষুব্ধ হওয়ায় উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানিয়েছে উভয়পক্ষ।
নিহতের ছোট ছেলে ও মামলার বাদী আসাদুল হাওলাদার বলেন, “আমার বাবা একজন নিরহ মানুষ ছিলেন। তাকে নির্মমভাবে আসামিরা কুপিয়ে হত্যা করেছে। আমরা অন্তত পাঁচ আসামির ফাঁসি ও বেশ কয়েকজনের যাবজ্জীব সাজার আশা করেছিলাম। কিন্তু আদালত যে রায় দিয়েছে, এতে আমরা ও আমাদের পরিবার সন্তুষ্ট নই।”
একই কথা জানালেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এমারত হোসেন। তিনি বলেন, “এই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করবে।”
আসামি পক্ষের আইনজীবী ফজুর রহমানর হিরু বলেন, “আমরা ন্যায় বিচার পাইনি। আমাদের সকল আসামি নির্দোষ ছিল। তাই আমরা পাঁজ আসামির সাজার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাব।”