হাত ছাড়া জন্ম, পায়ে লিখে এসএসসিতে কুড়িগ্রামের মানিক

পড়াশোনা করে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন তার।

আহসান হাবীব নীলুকুড়িগ্রাম প্রতিনিধি,বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Sept 2022, 03:13 PM
Updated : 15 Sept 2022, 03:13 PM

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী জছি মিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পা দিয়ে লিখে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন শারীরিক প্রতিবন্ধী এক কিশোর।

ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়নের চন্দ্রখানা গ্রামের ওষুধ ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ও মরিয়ম বেগম দম্পতির ছেলে ১৬ বছর বয়সী মানিক রহমান।

জন্ম থেকেই দুটি হাত নেই; যদিও পড়াশোনা করে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন তার।

বাবা-মায়ের আগ্রহ ও অনুশীলনে পা দিয়েই লেখালেখির কাজটা রপ্ত করেন মানিক। নিজের মেধা ও যোগ্যতায় ২০১৬ সালে পিইসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ এবং ২০২০ সালে জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছেন তিনি। এবারও ভালো কিছু করার প্রত্যাশা আছে তার।

মানিক রহমানের মা মরিয়ম বেগম বলেন, “আমার ছেলে জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। লেখাপড়ায় তার খুব আগ্রহ। আমরা তাকে সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছি। আমরা চাই, লেখাপড়া শিখে নিজে সে প্রতিষ্ঠিত হোক। সামাজিক মর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকুক।”

বাবা মিজানুর রহমান বলেন, “আমার দুই ছেলের মধ্যে মানিক বড়। জন্ম থেকেই সে শারীরিক প্রতিবন্ধী। তাই ছোট থেকেই তাকে পা দিয়ে লেখার অভ্যাস তৈরি করি। বর্তমানে অনেক সুস্থ শিক্ষার্থীর চেয়ে সে লেখাপড়ায় অনেক ভালো করছে। তার ফলাফল যখন ভালো হয় তখন গর্বে বুকটা ফুলে যায়। আপনারা দোয়া করবেন সে যেন তার লক্ষ্যে পৌঁছতে পারে।”

বৃহস্পতিবার ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়নের ফুলবাড়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (পাইলট) কেন্দ্রে দুপুর সাড়ে ১২টায় ৮ নম্বর কক্ষে বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন মানিক।

মানিক সাংবাদিকদের বলেন, “আমি লেখাপড়া করে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই। সবাই দোয়া করবেন, আল্লাহ পাক আমাকে যেন সুস্থ রাখেন।”

ওই কেন্দ্রের সুপার মো. মশিউর রহমান বলেন, “পরীক্ষার্থী মানিকের পায়ের লেখা অনেক সুন্দর। সে কাউকে বিরক্ত না করে একাগ্র মনে লিখে যায়। তার পায়ের লেখা দেখে কারও বোঝার উপায় নেই, সে শারীরিক প্রতিবন্ধী।”

জেলা শিক্ষা অফিস থেকে জানা যায়, কুড়িগ্রামের নয় উপজেলায় ৫৭টি কেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থী ২৭ হাজার ১৫১ জন। এর মধ্যে সাধারণ শিক্ষায় ৩৪টি কেন্দ্রে ১৮ হাজার ৮৩৯ জন, ভোকেশনালে ১১টি কেন্দ্রে দুই হাজার ৭৫৭ জন ও মাদ্রাসায় ১২টি পরীক্ষা কেন্দ্রে পাঁচ হাজার ৫৫৫ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন।