কক্সবাজারে 'টর্চার সেলে পর্যটক নির্যাতন’: গ্রেপ্তার ২

পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর সময় ধাওয়া দিয়ে দুইজনকে গ্রেপ্তার করে পর্যটন পুলিশ।

কক্সবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 August 2022, 02:29 PM
Updated : 14 August 2022, 02:29 PM

কক্সবাজারে হোটেল-মোটেল জোনে 'টর্চার সেল' থেকে পর্যটকসহ চারজনকে উদ্ধারের মামলায় দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পর্যটন পুলিশ।

পর্যটন পুলিশের কক্সবাজার অঞ্চলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম জানান, শনিবার মধ্যরাতে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের সুগন্ধা পয়েন্ট এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলেন জেলার নবগঠিত ঈদগাঁও উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের পশ্চিম খানাঘোনার নুরুল আজিমের ছেলে রাশেদুল ইসলাম (২৫) ও পূর্ব বামনকাটার আব্দুস সালামের ছেলে মো. সাকিল (২২)।

গত ৮ অগাস্ট ভোরে কক্সবাজার শহরের লাইট হাউজ এলাকা সংলগ্ন আবাসিক কটেজ জোন এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি কটেজ থেকে দুই পর্যটক ও দুই কিশোরকে উদ্ধার করে পুলিশ। তাদের সেখানে আটকে রেখে নির্যাতন চালানো হচ্ছিল বলে পুলিশের ভাষ্য।

এর একদিন পর ৯ অগাস্ট সকালে ভুক্তভোগী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বাবা মো. বেলাল আহমেদ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ১১ জনকে আসামি করে কক্সবাজার সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।

মামলায় ১১ আসামির মধ্যে আটজন পুরুষ ও তিনজন নারী।

পর্যটন পুলিশ জানিয়েছে, মামলাটি তদন্ত করছেন ট্যুরিস্ট পুলিশের এসআই আব্দুল হামিদ। ঘটনার তদন্তে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ঘটনায় সরাসরি জড়িত থাকার ব্যাপারে কয়েকজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল করিম বলেন, শনিবার মধ্যরাতে সমুদ্রসৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে ঘটনায় জড়িত দুই আসামি অবস্থান করছে খবরে পর্যটন পুলিশের একটি দল সেখানে অভিযান চালায়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের সন্দেহজনক দুই ব্যক্তি পালানোর চেষ্টা করলে ধাওয়া দিয়ে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।

গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে পর্যটন পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, কথিত টর্চার সেলে পর্যটকদের জিম্মি রেখে নির্যাতনের ঘটনায় সংঘবদ্ধ চক্রের ৮ থেকে ১০ জন দুর্বৃত্ত জড়িত রয়েছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে সহজ-সরল পর্যটক ও সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন দালালদের মাধ্যমে 'শিউলি রিসোর্ট' নামের কটেজে এনে নারী ও মাদক দিয়ে ব্ল্যাক মেইল করে আসছিল। পরে জিম্মিদের সঙ্গে ধারণ করা আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয়-ভীতি দেখাত। এতে ভুক্তভোগীরা মান-ইজ্জতের কথা ভেবে আইনশৃংখলা বাহিনীকে কোনো অভিযোগ দিত না।

"হোটেল-মোটেল জোনের আবাসিক কটেজগুলোতে বিভিন্ন ধরনের অপরাধ সংঘটনের সঙ্গে সংঘবদ্ধ একটি চক্র জড়িত। এ চক্রের বেশ কিছু দালাল আছে। স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীর ছত্রছায়ায় চিহ্নিত কয়েকটি কটেজে এসব অপরাধ সংঘটন করে আসছিল,” বলেন রেজাউল করিম।

ঘটনার সঙ্গে যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে অভিযানে তাদেরকেই গ্রেপ্তার করা হবে বলে পর্যটন পুলিশের এ কর্মকর্তা জানান।