“আজকে ৬০ ভাগের উপরে কারখানা ছুটি হয়েছে। শ্রমিকদের একটি বড় চাপ আছে। এ কারণেই সড়কে গাড়ির সংখ্যা বেশি।”
Published : 09 Apr 2024, 01:40 AM
কল-কারখানা ছুটির পর গাজীপুরে ঈদে ঘরে ফেরা যাত্রীদের ঢল নেমেছে।
এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জয়দেবপুর চৌরাস্তা থেকে জৈনাবাজার পর্যন্ত ৪০ কিলোমিটারে ১৪টি পয়েন্টে যাত্রী উঠানামার ফলে গাড়িগুলো গতি হারাচ্ছে। আর এর ফলে যানজট তৈরি হয়েছে।
সোমবার দুপুরে ছুটি পেয়ে শিল্প অধ্যুষিত গাজীপুর থেকে লাখ লাখ তৈরি পোশাক শ্রমিক বাড়িমুখো হয়। এ সময় সড়কে যাত্রী বেড়ে যাওয়ায় পরিবহন সংকট তৈরি হয়। বাস না পেয়ে অনেককে ট্রাক ও পিকআপে ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি যেতে দেখা যায়। এতে তাদের ভাড়াও বেশি গুনতে হচ্ছে।
যাত্রী ও চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকা থেকে আব্দুল্লাহপুর হয়ে জয়দেবপুর চৌরাস্তা এলাকায় গাড়িগুলো পৌঁছে। এরপর সালনা, রাজেন্দ্রপুর, হোতাপাড়া, ভবানীপুর, মেম্বারবাড়ি, বাঘের বাজার, গড়গড়িয়া নতুন বাজার, গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি, এক নম্বর সিঅ্যান্ডবি বাজার, আনসার রোড, মাওনা চৌরাস্তা, ওয়াপদার মোড়, এমসি বাজার, নয়নপুর বাজার, জৈনাবাজার এলাকায় যানজট তৈরি হয়েছে।
যানজটের কারণ হিসেবে দূরপাল্লার যানবাহনের চালক ও তাদের সহকারীরা অটোরিকশা, স্বল্প দূরত্বে চলাচল করা মিনিবাস, মহাসড়কের মোড়ে মোড়ে যাত্রীর জন্য অপেক্ষমাণ বাস, ইজিবাইক, ট্রাক ও পিকআপকে দুষছেন।
ময়মনসিংহগামী আলম এশিয়া পরিবহনের চালক দেলোয়ার হোসেন বলেন, “ঢাকা থেকে গাড়ি নিয়ে বের হয়েই জয়দেবপুর চৌরাস্তা এসেছি। এক ঘণ্টারও বেশি সময় লেগেছে মহাসড়কের ওই অংশ পার হতে। যত্রতত্র গাড়ি দাঁড় করিয়ে রেখে তোলা হচ্ছে যাত্রী। যেন কেউ দেখার নেই।
“গাড়িগুলোকে যদি শৃঙ্খলার মধ্যে মহাসড়কের একপাশে রেখে যাত্রী তোলার সুযোগ দেওয়া হতো তাহলে এমন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হতো না”, বলেন চালক দেলোয়ার হোসেন।
নেত্রকোণাগামী হযরত শাহজালাল পরিবহনের চালক আনোয়ার শেখ সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রী তুলি না বিধায় কোনো মোড়ে দাঁড়ানোর দরকার হয় না। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের রাজেন্দ্রপুর এলাকা পার হতে প্রায় ১৫ মিনিটের মতো সময় লেগেছে। রাজেন্দ্রপুর পার হয়ে হোতাপাড়া, ভবানীপুর, মেম্বার বাড়ি ও বাঘের বাজার যেতে ঘণ্টা খানেক সময় লেগেছে।”
বেশি সময় লাগার কারণ হিসেবে এই চালক বলেন, “মহাসড়কে ছোট ছোট পিকআপ, খোলা ট্রাক এবং স্বল্প দূরত্বের যানবাহনও দূরপাল্লার যাত্রী বহন করছে। তারা মহাসড়কের যত্রতত্র দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলছে।”
মহাসড়কের উপর দাঁড়িয়ে ভাড়া নির্ধারণ করে তারা যাত্রী তোলায় সময় যাচ্ছে; আর এতেই গাড়িগুলোর গতি হারাচ্ছে। মহাসড়কের মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে, এতে যানজটের তৈরি হচ্ছে বলে আনোয়ার শেখ জানান।
ট্রাকে যাত্রী পরিবহন করছেন চালক মমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, “ভবানীপুর থেকে যাত্রী নিয়ে কয়েকটি জায়গার যানজট পেরিয়ে মাওনা ফ্লাইওভারে ওঠেছি। মাওনা ফ্লাইওভার থেকে নেমেই ওয়াপদার মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রী তুলছে গাড়িগুলো। এতে পেছনে দীর্ঘ যানজট হচ্ছে। যানজট ফ্লাইওভার ছাড়িয়ে বহুদূর পর্যন্ত ছাড়িয়েছে।”
হাইওয়ে পুলিশের গাজীপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত আমাদের হাইওয়ে পুলিশ কাজ করছে, টহলদল কাজ করছে, রেকার মোতায়েন করা হয়েছে, অ্যাম্বুলেন্স আছে। সিসি টিভি ও ড্রোনের মাধ্যমে মনিটরিং করতেছি, যেখানেই অসঙ্গতি পাওয়া যাচ্ছে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
“অধিক গাড়ি, অধিক চাপ। আজকে ৬০ ভাগের উপরে গার্মেন্টস কারখানা ছুটি হয়েছে। শ্রমিকদের একটি বড় চাপ আছে। এ কারণেই সড়কে গাড়ির সংখ্যা বেশি। কোথাও গাড়ি থেমে নেই, গাড়ি চলছে। বিশেষ করে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে গাড়ি চলছে, কোথাও গাড়ি থেমে নেই”, বলেন পুলিশ সুপার।