এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন অন্য সাংবাদিকরা।
Published : 27 Mar 2025, 07:30 PM
বরিশালে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে দুই সাংবাদিককে ওপর হামলা অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এ সময় একজনের মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রবেশ পথে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান বরিশাল মহানগরের উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মুহাম্মদ ইমদাদ হুসাইন।
এদিকে হামলার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন জেলার অন্য সাংবাদিকরা।
আহতরা হলেন- স্থানীয় দৈনিক বরিশাল প্রতিদিনের আলোকচিত্রি নুরুল আমিন রাসেল এবং দৈনিক মুখপত্র পত্রিকার আলোকচিত্রি মনিরুজ্জামান। তারা বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
আহত রাসেল বলেন, “একটি হত্যা মামলার প্রধান আসামি আওয়ামী লীগ নেতা মো. আব্বাস হাওলাদারসহ পাঁচজন আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন। জামিন পেয়ে আদালত থেকে বের হওয়ার সময় বরিশাল জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রাঢ়ীর নেতৃত্বে ১২ থেকে ১৫ জন আব্বাস হাওলাদারকে অপহরণের চেষ্টা করেন।
“সেই দৃশ্য ধারণ করে বের হওয়ার সময় সোহেল রাঢ়ীর নেতৃত্বে আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়। হামলাকারীরা আমার মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে পুড়িয়ে দিয়েছে।”
আরেক আহত মনিরুজ্জামান বলেন, “ঘটনাস্থলের আশপাশে অন্তত ১০ থেকে ১২ জন পুলিশ সদস্য ছিলেন। কিন্তু তারা কেউ এগিয়ে আসেননি। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা আমাদের মারধর ও ক্যামেরা ভাঙচুর করে বীরদর্পে চলে গেছেন।”
খবর পেয়ে জেলার অন্য সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গিয়ে বিচারের দাবিতে সড়ক অবরোধ করেন। পরে সেনাবাহিনী এবং পুলিশ হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেন সাংবাদিকরা।
বরিশাল ফটো সাংবাদিক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আলামিন সাগর বলেন, “ঘটনাস্থলের আশপাশের ভিডিও ফুটেজ থেকে দেখা গেছে, সোহেল রাঢ়ীর নেতৃত্বে ১০ থেকে ১২ জন ওই দুই সাংবাদিকের ওপর হামলা চালিয়েছেন।”
হামলাকারীদের গ্রেপ্তারসহ পাঁচ দফা দাবি জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক খালিদ সাইফুল্লাহ বলেন, দায়িত্ব পালন করতে যাওয়া সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা করবেন তিনি।
হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে বরিশাল জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রাঢ়ী বলেন, “যারা এসব কথা বলছেন, তারা আওয়ামী লীগের লোক। মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগের বিষয়ে জানা নাই।”
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান বলেন, পুড়ে যাওয়া মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়েছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপ-পুলিশ কমিশনার ইমদাদ হুসাইন বলেন, “ঘটনার ভিডিও ফুটেজ পেয়েছি। জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে। এ ছাড়া ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশ সদস্যরা কেন নিষ্ক্রিয় ছিল, বিষয়টি বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”