Published : 29 Apr 2025, 08:19 PM
খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলায় সরকারি ভ্যাকসিন দেওয়ার কয়েকদিনের ব্যবধানে অন্তত ২০টি গরু-ছাগলের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া অসুস্থ হয়ে পড়েছে আরও অর্ধশতাধিক গরু-ছাগল।
উপজেলার রামগড় ইউনিয়নের লামকুপাড়া এলাকায় এ ঘটনার পর থেকে স্থানীয় খামারি ও গবাদিপশু লালন-পালনকারীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
ঘটনাটি তদন্ত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে মঙ্গলবার সকালে অসুস্থ পশু নিয়ে রামগড় ইউনিয়ন পরিষদের সামনে জড়ো হয়ে ক্ষোভ দেখিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
তবে স্থানীয়দের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রামগড় উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের ভেটেরিনারি সার্জন মো. রুবায়েতুল ইসলাম।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গেল দুই দিন ধরে ভ্যাকসিন দেওয়া গরু-ছাগলগুলো মারা যেতে শুরু করেছে। ১২ দিনের ব্যবধানে এখন পর্যন্ত ১৬টি ছাগল ও চারটি গরু মারা গেছে।
ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ, ১৫ এপ্রিল ভেটেরিনারি সার্জন রুবায়েতুল ইসলামের পরামর্শে তার দুই সহকারী জামাল উদ্দিন ও রমজান লামকুপাড়া এলাকায় গরু ও ছাগলকে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করেন। ভ্যাকসিন দেওয়ার একদিন পার হতে না হতেই গরু ও ছাগলের অসুস্থতা দেখা দেয়।
এরপর এক এক করে মারা যায় গবাদিপশুগুলো। ভ্যাকসিনে সমস্যা ছিল কিংবা একই সিরিজে সব পশুকে ভ্যাকসিন দেওয়ায় এমন ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ গবাদিপশু মালিকদের।
খামারি লুৎফর রহমান বলেন, “ভ্যাকসিন দেওয়ার দুই দিন পর আমার তিনটি ছাগল ও দুটি গরু মারা যায়। খামারে আরও অন্তত ১৫টি ছাগলকে ভ্যাকসিন দিয়েছি। ধীরে ধীরে সব ছাগল অসুস্থ হয়ে পড়ছে।”
তার গ্রামে যারা ভ্যাকসিন দিয়েছে সবার গরু-ছাগলের একই অবস্থা বলে জানান তিনি।
লামকুপাড়া গ্রামের গৃহিণী সায়েরা খাতুন বলেন, “আমার দিনমজুর স্বামী বেশিরভাগ সময় অসুস্থ থাকেন। গরু-ছাগল লালনপালন করেই আমাকে সংসার চালাতে হয়। ভ্যাকসিন দেওয়ার পর আমার তিনটি ছাগল মারা গেছে। বাড়িতে আরও তিনটি অসুস্থ অবস্থায় রয়েছে।”
একই অভিযোগ করেছেন লামকুপাড়ার ওবায়দুল হক, আবুল কাশেম, আবদুল করিম, শান্তনু দেবী এবং চিকনি ত্রিপুরা। তাদের দাবি, এ ঘটনার সঠিক তদন্ত এবং দায়ীদের বিচার করতে হবে।
ভেটেরিনারি সার্জন রুবায়েতুল ইসলাম বলেন, “মারা যাওয়া ছাগলগুলোকে ‘গড ফক্স’ নামে একটি ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। তবে গরু মারা যাওয়ার বিষয়টি গুজব। ভ্যাকসিনের মেয়াদ ছিল এবং ফ্রিজে সংরক্ষণ করা ছিল।
“তবুও মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আক্রান্ত গবাদিপশুগুলোকে চিকিৎসা দেওয়া হবে। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের কোনও সুযোগ আমাদের নেই।”
রামগড় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মমতা আফরিন বলেন, “ঘটনাটি শুনেছি, তবে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”