চারটির মধ্যে সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে হত্যাচেষ্টা ছাড়াও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা আছে।
Published : 13 Sep 2024, 12:49 AM
সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলাসহ সিলেটে চার মামলায় জামিন পেয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর।
বুধবার সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক স্বপন কুমার সরকার শুনানি শেষে বাবরের জামিন মঞ্জুর করেন বলে বৃহস্পতিবার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন আদালতের পিপি আইনজীবী সরওয়ার আহমেদ চৌধুরী আবদাল।
সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা, সাবেক রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত হত্যাচেষ্টা এবং বিস্ফোরক আইনে করা দুটি মামলায় লুৎফুজ্জামান বাবর এ জামিন পেয়েছেন।
সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী জয়নাল আবদীন সাংবাদিকদের বলেন, ৪ সেপ্টেম্বর লুৎফুজ্জামান বাবরের জামিন শুনানির আবেদন করেন তার আইনজীবী। পরে আদালতের বিচারক ১১ সেপ্টেম্বর শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেন। শুনানি শেষে বিচারক তার জামিন মঞ্জুর করেন।
২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে আওয়ামী লীগের ঈদ পরবর্তী জনসভা শেষে বের হওয়ার পথে গ্রেনেড হামলায় গুরুতর আহত হন শাহ এএমএস কিবরিয়া।
ঢাকায় নেওয়ার পথে মারা যান তিনি। হামলায় তার ভাতিজা শাহ মঞ্জুরুল হুদা, আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা আবদুর রহিম, আবুল হোসেন ও সিদ্দিক আলী নিহত হন। আহত হন অন্তত ৭০ জন।
ঘটনার পরদিন জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল মজিদ খান বাদী হয়ে হত্যা মামলা ও পুলিশ বাদী হয়ে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে।
পরে মামলা দুটি সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়। তদন্ত শেষে ২০০৫ সালের ১৮ মার্চ শহীদ জিয়া স্মৃতি ও গবেষণা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল কাইউমসহ ১০ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে প্রথম অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি।
কিন্তু অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি আবেদন করে বাদীপক্ষ।
২০০৭ সালে মামলাটি পুনঃতদন্তের জন্য আবার সিআইডিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
দ্বিতীয় দফায় ২০১১ সালের ২০ জুন আসামির সংখ্যা আরও ১৬ জন বাড়িয়ে ২৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
এ নিয়েও আপত্তি তোলে বাদীপক্ষ।
পরে ২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর মামলার পঞ্চম তদন্তকারী কর্মকর্তা সিলেট অঞ্চলের তৎকালীন এএসপি মেহেরুন্নেসা পারুল আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
এতে নতুন করে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, সিলেটের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ ৩৫ জনকে আসামি করা হয়। তাদের মধ্যে হারিছ চৌধুরীসহ দুজন মামলা চলাকালে মারা গেছেন।
এদিকে, ২০০৪ সালের ২১ জুন সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের নির্বাচনি এলাকা সুনামগঞ্জের দিরাই বাজারে একটি রাজনৈতিক সমাবেশে গ্রেনেড হামলা হয়। সমাবেশে তখন প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছিলেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। তিনি অল্পের জন্য রক্ষা পান। গ্রেনেড বিস্ফোরণে এক যুবলীগের কর্মী ঘটনাস্থলে নিহত হন।
ওই ঘটনায় দিরাই থানার এসআই হেলাল উদ্দিন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে হত্যাচেষ্টা ছাড়াও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি মামলা করেন।
এসব মামলায় পরে বিএনপি সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরকে আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।