ময়মনসিংহে কিডনির পাথর অপসারণে অস্ত্রোপচারে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর মৃত্যুর অভিযোগে মামলা হয়েছে। এতে দুই চিকিৎসকসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়।
শনিবার নিহত রেখা আক্তারের (২০) স্বামী মাহবুব আলম বাদী হয়ে মামলাটি করেন বলে কোতোয়ালী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফারুক হোসেন জানান।
আসামিরা হলেন- নগরীর ব্রাহ্মপল্লী এলাকার পেশেন্ট কেয়ার হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রফিক মিয়া (৩৫), অমিত বাবু (৩০), ডা. মো. আশরাফুল হক মোল্লা (৪৫). ডা. আরিফ রব্বানী (৩১), মেহেদী হাসান (২৭) এবং মো. তারেক মিয়া (৩০)।
এ ঘটনায় চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান জেলা সিভিল সার্জন।
মামলার নথির বরাত দিয়ে পরিদর্শক ফারুক হোসেন বলেন, বাদী নিহত রেখা আক্তারের স্বামী মাহবুল আলম জেলার ত্রিশাল উপজেলার আমিয়ান ডাঙ্গুরী গ্রামের প্রয়াত সাইদুল ইসলামের ছেলে। তার স্ত্রী জমজ সন্তানের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। সম্প্রতি তিনি কিডনিতে ব্যথা অনুভব করেন।
এ অবস্থায় গত ১৩ ফেব্রুয়ারি পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে রেখা আক্তারের কিডনিতে পাথর ধরা পড়ে। ১৬ ফেব্রুয়ারি পূর্বপরিচিত মেহেদী হাসান রোগীকে নগরীর চরপাড়ার ব্রাহ্মপল্লী এলাকার পেশেন্ট কেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যান।
ওই হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিক মিয়া এবং অমিত বাবু নামের একজনের সঙ্গে অস্ত্রোপচারের জন্য ৯৪ হাজার টাকায় চুক্তি হয়। এর মধ্যে ৫০ হাজার টাকা অগ্রিম দেন মাহবুব আলম।
গত বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে রেখার অস্ত্রোপচারের জন্য তাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যান চিকিৎসকরা।
মামলার এজাহারে বলা হয়, অস্ত্রোপচার শেষে পোস্ট অপারেটিভ রুমে রাখার ঘণ্টাখানেক পরও রেখার জ্ঞান না ফেরায় স্বজনরা কান্নাকাটি শুরু করেন।
হাসপাতালের নার্সদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, রোগীর এনেস্থেশিয়ায় একটু সমস্যা হয়েছে তাই, এমন হচ্ছে।
পরে রাত ৩টার দিকে ডা. মো. আশরাফুল হক মোল্লা ও ডা. আরিফ রব্বানী এসে তড়িঘড়ি অ্যাম্বুলেন্স ডেকে রেখাকে চুরখাই কমিউনিটি বেজড্ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রেখার লাশ ফের পেশেন্ট কেয়ার হাসপাতালে নিয়ে গেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্বজনদের তাড়িয়ে দিতে যায়। না গেলে মেরে তাদের মরদেহ গুমের হুমকি দেন হাসপাতালের লোকজন।
পরে স্থানীয়রা হাসপাতালটি ঘেরাও করলে পুলিশ গিয়ে রেখার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
এ ঘটনায় তদন্ত কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে বলে জেলা সিভিল সার্জন নজরুল ইসলাম জানান।
“তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আরও পড়ুন: