পঞ্চগড়ে রাতের আঁধারে এক প্রবাসীর চা বাগানের ভেতরে থাকা বিভিন্ন প্রজাতির ‘প্রায় ছয় হাজার’ গাছ কেটে ফেলেছে অজ্ঞাত কেউ।
বৃহস্পতিবার রাতের কোনো সময় সদর উপজেলার চাকলারহাট ইউনিয়নের দক্ষিণ ভাটিয়াপাড়া গ্রামে সিদ্দিকী টি এস্টেটে এ ঘটনা ঘটে।
যুক্তরাষ্ট্রে থাকা বাগান মালিক মিজানুর রহমান সিদ্দিকীকে গাছ কাটার বিষয়টি জানান তার ছোটভাই মাসুদ করিম সিদ্দিকী।
পেঁপে, সুপারি, নারিকেল ও মেহগনির এ গাছগুলো কর্তনে প্রায় ৬০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করছেন বাগানের মালিক।
মাসুদ করিম সিদ্দিকী জানান, দেশে আত্মীয়-স্বজনদের রেখে তিন দশকের বেশি সময় ধরে তার ভাই যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। প্রবাসে অর্জিত কষ্টের টাকায় পঞ্চগড় সদর উপজেলার চাকলাহাট ইউনিয়নে প্রায় ২২ একর জমি কিনে সেখানে চা বাগান গড়ে তোলেন তিনি। পরিচ্ছন্ন ও দৃষ্টিনন্দন চা বাগানের ভেতরেই পেঁপে, সুপারি, পেয়ারা, মেহগনি, নারিকেল ও আমের প্রায় ছয় হাজার গাছের বাগান করেন।
মাসুদ করিম আরও জানান, গ্রামের ৬০ জন নারী-পুরুষ তার বাগানে নিয়মিত কাজ করেন। সৌন্দর্যের কারণে বাগানটি দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করেন স্থানীয় ও আশপাশের এলাকার লোকজন। শুক্রবার সকালে চা পাতা তুলতে গিয়ে বাগানের গাছগুলো কাটা দেখে চমকে ওঠেন শ্রমিকরা।
তিনি বলেন, “আমার ভাই বিদেশের কষ্টার্জিত আয়ে তিলে তিলে বাগানটি গড়ে তুলেছেন। প্রবাসে থেকেও তিনি নিয়মিত বাগানের খোঁজ-খবর নিতেন। গাছগুলো নির্বিচারে কেটে ফেলায় খবর শুনে তিনি মুষড়ে পড়েছেন।”
স্থানীয় প্রশাসনের কাছে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও জড়িতেদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।
বাগানের দায়িত্বে থাকা ব্যবস্থাপক আনিছুর রহমান আনিছ বলেন, “শ্রমিকরা সকালে চা প্লাকিং করতে গিয়ে ঘটনা দেখে নির্বাক হয়ে যায়।”
আকস্মিক এমন ঘটনায় নিজেরাও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “দ্রুত দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। নয়ত আমাদেরও আর কাজ করা হবে না।”
খবর পেয়ে শুক্রবার বিকালে পঞ্চগড়ের এসপি মোহাম্মদ ইউসুফ আলী, জেলা পরিষদের প্রশাসক আনোয়ার সাদাত সম্রাট, সদর থানার পরিদর্শক আব্দুল লতিফ মিয়াসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ক্ষতিগ্রস্ত বাগানটি পরিদর্শন করেন।
এ সময় আনোয়ার সাদাত সম্রাট বলেন, “প্রবাসীর বাগানের কয়েক হাজার গাছ কেটে ফেলার ঘটনাটি বেশ দুঃখজনক। প্রশাসনকে দ্রুত সুষ্ঠু তদন্ত করে ঘটনায় জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাই।”
অমানবিকভাবে গাছগুলো কেটে ফেলা হয়েছে উল্লেখ করে সদর থানার পরিদর্শক আব্দুল লতিফ মিয়া বলেন, “আমরা ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছি। যারাই জড়িত থাকুক তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।”