হারানো সন্তানকে একমাস পর ফিরে পেয়ে মা-বাবার চোখে আনন্দের অশ্রু দেখা দেয়।
Published : 02 May 2024, 09:35 PM
গাজীপুর মহানগরের নাওজোর এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে অপহৃত আট মাসের এক শিশুকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক দম্পতিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, ভিক্ষাবৃত্তির কাজে ব্যবহার করার উদ্দেশ্যে শিশুটিকে অপহরণ করে ওই দম্পতি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে গাজীপুর মহানগরের উপ-পুলিশ কমিশনার আবু তোরাব মো. শামছুর রহমান তার কার্যালয়ে ব্রিফিংকালে সাংবাদিকদের ওইসব জানিয়েছেন।
এসময় গাজীপুর সদর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার ফাহিম আসজাদ, বাসন থানার এসআই নাজমুল হক এবং উদ্ধার শিশুটির বাবা-মা উপস্থিত ছিলেন।
ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তাররা হলেন- বগুড়ার সারিয়াকান্দি এলাকার লুৎফর রহমানের ছেলে মো. আবু সাইদ ওরফে সুমন (৪০) এবং তার স্ত্রী কুড়িগ্রামের উলিপুর থানার অনন্তপুর গ্রামের আফজাল হোসেনের মেয়ে মোসা. আইরিন (৩৪)।
তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে আইরিনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, অপহরণ করে নিয়ে শিশুটিকে ময়মনসিংহে ভিক্ষাবৃত্তির কাজে ব্যবহার করছিলেন তিনি।
ছোট শিশু সঙ্গে নিয়ে ভিক্ষা করে মানুষের বেশি সহানুভুতি ও অর্থ পাওয়া যায়; তাই আইরিন এ কাজ করেন বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন।
মামলার বরাতে উপ-পুলিশ কমিশনার আবু তোরাব জানান, গ্রেপ্তার আইরিন ও তার স্বামী এবং ওই পোশাক শ্রমিক ও তার স্ত্রী-সন্তান গাজীপুর মহানগরের বাসন থানার ফরিদ মিয়ার বাড়ির পাশাপাশি কক্ষে ভাড়া থাকতেন।
মামলার উল্লেখ করা হয়, গত ৩ এপ্রিল সকালে শিশুটির বাবা অন্যদিনের মত কর্মস্থলে যান। দুপুরে মা শিশুটিকে গোসল করিয়ে ঘরের বিছানায় শুইয়ে রেখে নিজে গোসলে যান। গোসল থেকে ফিরে শিশুটিকে বিছানায় না পেয়ে আশপাশের বিভিন্ন স্থানে খুঁজতে থাকেন তিনি।
এ সময় পাশের ঘরের ভাড়াটিয়া আইরিন ও তার স্বামী সুমনকে পাওয়া যাচ্ছিল না এবং তাদের মোবাইল ফোনও বন্ধ ছিল।
পরে শিশুটির মা-বাবা বিষয়টি পুলিশকে জানান এবং পরদিন আইরিন-সুমনকে আসামি করে বাসন থানায় মামলা করেন।
পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৫ এপ্রিল মো. আবু সাইদ ওরফে সুমনকে কুড়িগ্রাম থেকে এবং ২ মে ভোরে তার স্ত্রী আইরিনকে ময়মনসিংহের কোতোয়ালি মডেল থানাধীন চায়না মোড় এলাকা থেকে গ্রেপ্তার ও তার হেফাজত থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধারের পর শিশুটিকে তার মা-বাবার কাছে ফিরিয়ে দেয় পুলিশ।
একমাস পর হারানো সন্তানকে ফিরে পেয়ে মা-বাবার চোখে আনন্দে অশ্রু দেখা দেয়। তখন তারা গ্রেপ্তার স্বামী-স্ত্রীর উপযুক্ত শান্তি দাবি করেন।
এ ঘটনায় আরো কেউ জড়িত থাকলে তাদেরও দ্রুত গ্রেপ্তারের অনুরোধ জানিয়েছেন শিশুটির মা-বাবা।