কুমিল্লায় ‘ডাকাত’ সন্দেহে ২ জনকে পিটিয়ে হত্যা

রাতে স্থানীয় মসজিদ ও একটি ওয়াজ-মাহফিলের মাইক থেকে গ্রামে ডাকাত ঢুকেছে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়।

কুমিল্লা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Jan 2023, 08:03 AM
Updated : 13 Jan 2023, 08:03 AM

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় ‘ডাকাত’ সন্দেহে গণপিটুনিতে দুই যুবককে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। গণপিটুনির শিকার আরও একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার দারোরা ইউনিয়নের পালাসুতা গ্রামের নাবু মিয়ার বাড়ি থেকে আটক করে তিন জনকে গণপিটুনি দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন মুরাদনগর থানার ওসি কামরুজ্জামান তালুকদার।

নিহতরা হলেন- পালাসুতা গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে ইসমাইল হোসেন (৩১) ও একই ইউনিয়নের কাজিয়াতল গ্রামের আবদুস সালামের ছেলে নুর আলম (৩০)। এ ঘটনায় গুরুতর আহত আরেক যুবকের নাম শাহজাহান মিয়া।

ওসি কামরুজ্জামান তালুকদার জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার হিরারকান্দা গ্রাম থেকে মাইকে ঘোষণা দেওয়া হয় বিভিন্ন স্থানে গণডাকাতি হচ্ছে। এ খবরে গ্রামবাসী সর্তক অবস্থানে থাকে।

এক পর্যায়ে পালাসুতা গ্রামের একটি ওয়াজ-মাহফিলের মাইক থেকে গ্রামে ডাকাত ঢুকেছে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়।

পরে স্থানীয়রা পালাসুতা গ্রামের নাবু মিয়ার বাড়িতে ‘আশ্রয় নেওয়া’ তিন যুবককে আটক করে গণপিটুনি দেয়।

খবর পেয়ে রাত ২টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুরুতর আহত তিনজনকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন। আরেকজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানান ওসি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই গ্রামের অন্তত তিন বাসিন্দা বলেন, পাশের কেওট গ্রামে ডাকাতি করতে গিয়ে ধাওয়া খেয়ে তিন জন ওই বাড়িতে এসে আশ্রয় নিয়েছিল।

তারা বলেন, গত কয়েকদিনের মধ্যে পালাসুতা গ্রামের প্রবাসী রিপন মিয়ার বাড়ি, কাজিয়াতল গ্রামের রহুল আমিনের বাড়িসহ একাধিক ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে ওই এলাকায় ডাকাত আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

বৃহস্পতিবার রাত ১১টার পর পালাসুতা গ্রামে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে বলে মসজিদ ও ওয়াজ মাহফিল থেকে মাইকে ঘোষণা দেওয়া শুরু হয়। এর পর ডাকাত প্রতিরোধে লাঠিসোঁটা নিয়ে গ্রামের রাস্তায় অবস্থান করে স্থানীয়রা।

এ সময় পাশের গ্রামে ডাকাতি করতে গিয়ে ধাওয়া খেয়ে তিন যুবক এক বাড়িতে আশ্রয় নেওয়ার খবরে ‘ডাকাত-ডাকাত’ বলে তাদের আটক করে গণপিটুনি দেয় লোকজন।

ওসি কামরুজ্জামান বলেন, “নিহতদের মরদেহ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আমরা ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছি।”