লিজা বৃহস্পতিবার ঢাকার একটি হাসপাতালে অস্ত্রপচারের মাধ্যমে যমজ কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন।
Published : 31 May 2024, 10:11 AM
১৬ বছরের দাম্পত্য জীবন চলছিল নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার সুমন মিয়া ও সাজিয়া আফরিন লিজার। দেশ-বিদেশে দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে লিজা বৃহস্পতিবার ঢাকার একটি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে যমজ কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। কিন্তু সেই সন্তানের মুখ দেখতে পারেননি সুমন মিয়া।
রায়পুরা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সুমন মিয়া আটদিন আগে প্রচারে বেরিয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত হন।
সুমন মিয়া উপজেলার চরসুবুদ্ধি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ব্যবসায়ী হাজী নাসির উদ্দিনের ছেলে। তিনি একসময় নরসিংদী সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
সুমন মিয়ার বাবা হাজী নাসির উদ্দিন বলেন, “দুই নাতনি ও পুত্রবধূ সুস্থ আছে। আমার নাতনি দুইটা দেখতে খুব সুন্দর হয়েছে। তারা সুস্থ আছে। তবে বড় বেদনা হলো, আমার ছেলে নিজ সন্তানের মুখ দেখে যেতে পারল না। তার আগেই সন্ত্রাসীরা আমার ছেলে সুমনকে পৃথিবী থেকে বিদায় করেছে।
“ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়াই তার কাল হয়ে দাঁড়াল। নিষ্পাপ শিশু দুটি পিতার মুখ দেখার আগেই পিতৃহারা হলো। সুমন বেঁচে থাকলে সন্তানের মুখ দেখে সবচেয়ে বেশি খুশি হতো।”
২২ মে রায়পুরা উপজেলার চরাঞ্চল পাড়াতলী ইউনিয়নে নির্বাচনি প্রচারে যান তালা প্রতীকের ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সুমন মিয়া। একই দিন ওই ইউনিয়নে যান তার প্রতিপক্ষ চশমা প্রতীকের ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আবিদ হাসান রুবেল।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পাড়াতলীর মামদেরকান্দি গ্রামের ছলিমবাড়ির সামনের রাস্তায় দুই প্রার্থীর সমর্থকরা মুখোমুখি হয়। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হলে রুবেলের সমর্থকরা সুমন মিয়ার গাড়ি ভাঙচুর ও ঘেরাও করেন। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে চলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া।
একপর্যায়ে সুমন গাড়ি থেকে নেমে দৌড়ে পালানোর সময় মারধরের শিকার হন। আহত সুমনকে কর্মীরা উদ্ধার করে পাড়াতলী থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে বাঁশগাড়ি পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে রাখেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় পুলিশের সহযোগিতায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক সুমনকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রার্থী সুমন মিয়া নিহতের ঘটনায় ২৩ মে রায়পুরা উপজেলা পরিষদের সব পদের নির্বাচন স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। ঘটনার তিন দিন পর ২৬ জনকে আসামি করে নিহতের বাবা হত্যা মামলা করেন। এখন পর্যন্ত চারজন গ্রেপ্তার হয়েছেন।
এ ব্যাপারে রায়পুরা থানার এসআই আব্দুল হালিম বলেন, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সুমন মিয়া হত্যার ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় এজাহারভুক্ত একজন আসামিসহ মোট চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।
আরও পড়ুন:
রায়পুরায় প্রার্থী নিহতের ঘটনায় মামলা, প্রধান আসামি প্রতিদ্বন্দ্বী
প্রার্থী নিহতের ঘটনায় নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত
নরসিংদীতে ভোটের প্রচারে হামলা, প্রার্থী নিহত