গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটাররা ছন্দে না থাকলে দলে সমস্যা হওয়াই স্বাভাবিক, বিশ্বকাপ থেকে দেশে ফিরে বললেন বাংলাদেশ দলের সহ-অধিনায়ক তাসকিন আহমেদ।
Published : 28 Jun 2024, 12:01 PM
দশম ওভারে মাহমুদউল্লাহ কীভাবে পাঁচটি বলে রান নিতে পারলেন না, দেশের ক্রিকেটে সেটা নিয়ে চর্চা চলছে এখনও। সাকিব আল হাসান তো সেদিন আউট হয়ে গেছেন প্রথম বলেই। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওই ম্যাচে যেমন, তেমনি গোটা বিশ্বকাপেই মিইয়ে ছিলেন দেশের দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। ব্যর্থ অভিযান শেষে দেশে ফিরে বাংলাদেশ দলের সহ-অধিনায়ক তাসকিন আহমদ অকপটেই বললেন, এই দুজন ছন্দে না থাকায় ভুগতে হয়েছে দলকে।
সুপার এইটের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের ১১৬ রান তাড়ায় ১২.১ ওভারে জিততে পারলেই সেমি-ফাইনালে খেলতে পারত বাংলাদেশ। সেদিন তৃতীয় ওভারে ক্রিজে গিয়ে প্রথম বলেই নাভিন-উল-হাককে ফিরতি ক্যাচ দেন সাকিব।
মাহমুদউল্লাহ ক্রিজে যান সাত নম্বরে। নবম ওভারের শেষ দুই বলে রাশিদ খানের বলে লিটন দাসের টানা দুটি বাউন্ডারির পর সেমির সমীকরণ মেলাতে ১৯ বলে ৪৩ রান প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশের। সেই সময় নুর আহমাদের ওভারে একটি চার মারলেও বাকি ৫ বল থেকে কোনো রান নিতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ। বাংলাদেশের সম্ভাবনায় একরকম পেরেক ঠোকা হয়ে যায় তখনই। পরের ওভারেই তিনি আউট হন ৯ বলে ৬ রান করে।
শেষ ম্যাচটি আসলে বলা যায় গোটা আসরেই তাদের পারফরম্যান্সের প্রতীকী। সবগুলি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলা সাকিবের এবারের আসর কেটেছে চরম হতাশাজনক। ৭ ইনিংসে রান করেছেন তিনি ১১১। এর মধ্যে ৬৪ রানই করেছেন নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচে। তার ব্যাটিং গড় ১৮.৫০, স্ট্রাইক রেট ১০৬.৭৩।
ক্যারিয়ারজুড়ে সবসময়ই তিনি বল হাতে মোটামুটি সফল ছিলেন। কিন্তু এবার দাগ লেগেছে তার সেই গর্বের জায়গাতেও। উইকেট নিতে পেরেছেন কেবল তিনটি। পাঁচ ম্যাচেই তিনি উইকেটশূন্য ছিলেন।
দলে যার দায়িত্ব ছিল ফিনিশারের, যার ক্যারিয়ারের পুনরুজ্জীবন নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে দেশের ক্রিকেটে, সেই মাহমুদউল্লাহও চূড়ান্ত ব্যর্থ আসল জায়গাতেই। ৭ ইনিংসে তার মোট রান ৯৫। ১৫.৮৩ গড়ের সঙ্গে স্ট্রাইক রেট তো চরম বিব্রতকর (৯৪.০৫)। পাঁচ ম্যাচে বোলিং করে উইকেট নিতে পেরেছেন একটি।
গ্রুপ পর্বে তিন জয় নিয়ে সুপার এইটে ওঠে একটি ম্যাচেও জিততে পারেনি বাংলাদেশ। দেশে ফিরে শুক্রবার সকালে বিমানবন্দরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তাসকিন বললেন, এমন গুরুত্বপূর্ণ দুজন ক্রিকেটারের ফর্মে না থাকা দলকে পিছিয়ে দিয়েছে নিশ্চিতভাবেই।
"দুজন সিনিয়রের অফ ফর্ম আমাদের দলে অবশ্যই প্রভাব পড়েছে। কিন্তু মাঠের বাইরে প্রভাব পড়েনি। কারণ, মাঠের বাইরে তারা সবসময়ই ভালো টিমম্যান। এই যে ৪৭ দিনের মতো এক সঙ্গে ছিলাম, সবার আচরণ খুব ভালো ছিল, সবাই এক সঙ্গে ছিলাম। মাঠের বাইরে সব তো ঠিকই ছিল।”
“আসলে দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়রা ছন্দে না থাকলে ওই দলে সমস্যা হওয়াটাই স্বাভাবিক। আশা করছি দ্রুত সামনে এসব কাটিয়ে উঠে সামনে ভালো কিছু করব।"
সামনের সময়টা তারা দুজন থাকবেন কি না, কিংবা তাদেরকে রাখা হবে কি না, সেটি নিয়েও কৌতূহল থাকবে দেশের ক্রিকেটের।