“দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্তদের এক দপ্তর থেকে আরেক দপ্তরে বদলি কোনো কার্যকরী শাস্তি হতে পারে না”, বলেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
Published : 30 Jun 2024, 10:51 PM
দুর্নীতিতে অভিযুক্ত সরকারি কর্মচারীদের বদলি করা ‘কোনো শাস্তি হতে পারে না’ বলে মনে করেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য একে আব্দুল মোমেন।
চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার পাশাপাশি চাকরিচ্যুত করার পরামর্শও দিয়েছেন আমলাতন্ত্র থেকে রাজনীতিতে আসা মোমেন।
রোববার সন্ধ্যা ৬টায় নিজের ভেরিফায়েড ফেইসবুকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ৬৮ শব্দের এক স্ট্যাটাসে দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
পুলিশের বর্তমান ও সাবেক এবং এনবিআরের কয়েকজন কর্মকর্তার আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন বিপুল পরিমাণ সম্পদের তথ্য গণমাধ্যমে আসার মধ্যে এমন মত প্রকাশ করলেন মোমেন।
ফেইসবুকে পোস্ট দেওয়ার তিন ঘণ্টায় তার বক্তব্যের কমেন্ট ঘরে সাড়ে তিনশ মন্তব্য পড়ে। যারা কমেন্ট করেছেন তাদের বেশিরভাগই এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন। তবে কেউ কেউ টিপ্পনীও কেটেছেন।
এই সময়ের মধ্যে মোমেনের স্ট্যাটাস শেয়ার করেছেন আড়াইশ ফেইসবুক ব্যবহারকারী। ১ হাজার ৬০০ লাইক করেছেন, ৪৬১টি লাভ রিঅ্যাক্টও পড়েছে স্ট্যাটাসে। ৩৯ জন অবশ্য হাহা রিঅ্যাক্ট দিয়েছেন।
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন তার ফেইসবুক পাতায় লেখেন, “দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্তদের এক দপ্তর থেকে আরেক দপ্তরে বদলি কোনো কার্যকরী শাস্তি হতে পারে না। বরং দুর্নীতিতে অভিযুক্ত ব্যক্তির সম্পদের সঠিক হিসাব বের করতে হবে এবং তার সকল সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে নিলামে বিক্রি করে দেয়া দরকার এবং অবশ্যই তাকে তড়িত বেগে চাকরিচ্যুত করতে হবে।
“বদলি শাস্তি হতে পারে না। মনে রাখতে হবে, সরকারি চাকরিজীবীর সবচেয়ে বড় হাতিয়ার ও সম্পদ হচ্ছে তার সরকারি চাকরিটি। দুর্নীতিপরায়ণরা জনগণের শত্রু, দেশের শত্রু।”
আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থমন্ত্রী প্রয়াত আবুল মাল আব্দুল মুহিতের ভাই একে আব্দুল মোমেন ২০১৮ সালে মুহিতের ছেড়ে দেওয়া সিলেট-১ আসন থেকে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে সংসদ সদস্য হন। সেবার নির্বাচিত হয়েই পররাষ্ট্র মন্ত্রীর দায়িত্ব পান মোমেন। মোমেন-মুহিত পরিবারে তিন পুরুষ ধরে পেশা হিসাবে আমলাতন্ত্রের শীর্ষ পদে থাকার গৌরব রয়েছে।
তবে চলতি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে আসলেও মোমেনকে মন্ত্রিসভায় স্থান দেওয়া হয়নি। সংসদে চলতি বাজেট অধিবেশনেও তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে শক্ত বক্তব্য দিয়েছেন।
সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের বিপুল পরিমাণ সম্পদের তথ্য প্রকাশ নিয়ে আলোচনার মধ্যেই এনবিআর সদস্য মতিউর রহমানের ছেলের ১২ লাখ টাকায় কোরবানির খাসি কেনার বিষয়টি সামনে আসে।
মতিউরকে এনবিআর থেকে সরিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে ন্যস্ত করা হয়েছে। আবার তার বিরুদ্ধে একদিকে দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত শুরু করেছে।
এনবিআরের প্রথম সচিব (কর) কাজী আবু মাহমুদ ফয়সাল ও তার স্বজনের নামে ৭০০টি ব্যাংক হিসাব খুঁজে পাওয়ার বিষয়টি নিয়েও আলোচনা চলছে।