আমতলী ও তালতলী উপজেলার ২৫৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে উপজেলা নির্বাহী অফিস।
Published : 26 May 2024, 10:24 PM
ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন পায়রা নদীতে পানি বৃদ্ধিতে ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে আমতলী ও তালতলী উপজেলার ২৭ গ্রাম।
রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পায়রা নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে চার-পাঁচ ফুট পানি বৃদ্ধি পেলে আমতলীর বালিয়াতলী ও পশুর বুনিয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে যায় বলে জানিয়েছেন আমতলীর আরপাঙ্গাশিয়া ইউপি চেয়ারম্যান সোহেলী পারভীন মালা।
তিনি জানান, পায়রা নদীতে পানি বৃদ্ধির বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের প্রায় ৩০০ ফুট ভেঙে গেছে। এর ফলে বালিয়াতলী ও পশুরবুনিয়া গ্রাম ২-৩ ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ভেসে গেছে বোরো ধানের ক্ষেত।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তাদের গাফিলতির কারণে এ বাঁধ ভেঙে গেছে অভিযোগ করেন তিনি।
একই অভিযোগ করেন বুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. নিজাম উদ্দিনও। তিনি বলেন, “পাউবো কর্মকর্তারা বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতি করেছেন। তারা দায়সারাভাবে বাঁধ নির্মাণ করেছেন।”
এছাড়া জোয়ারের পানি বৃদ্ধির ফলে আমতলীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাইরের আরপাঙ্গাশিয়া, তারিকাটা, লোছা, বৈঠাকাটা, বাসুগি, নয়াভাঙ্গলী, ফেরিঘাট, খাদ্যগুদাম সংলগ্ন চর, ওয়াপদা চর, পশ্চিম ঘটখালী, আংগুলকাটা, গুলিশাখালীর জেলেপাড়া তলিয়ে গেছে।
তালতলী উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাইরের মরানিদ্রা, আগাপাড়া, মেনিপাড়া, গোড়াপাড়া, অংকুজানপাড়া, মোয়াপাড়া, নামিশেপাড়া, ছোবাহাপাড়া, খোট্টারচর, জয়ালভাঙ্গা, আশারচর, তেতুলবাড়িয়া, জয়ালভাঙ্গা, সকিনা, আমখোলা গ্রামও প্লাবিত হয়েছে।
তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ রাকিব বলেন, সরকারি বরাদ্দের অভাবে জেলার অনেকগুলো বেড়িবাঁধ মেরামত করা সম্ভব হয়নি। জেলায় ৮০৫ কিলোমিটার বাঁধের মধ্যে বিভিন্ন এলাকায় দেড় কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। আয়লা-আম্পানের পর সেগুলো আর মেরামত করা যায়নি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. হিমেল বলেন, “আমতলীর ভেঙে যাওয়া বাঁধ দ্রুত মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এছাড়া তালতলী উপজেলার তেতুরবাড়িয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ৩-৪ জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। ফলে সেখানে কয়েক শত পরিবার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি মাপক মো. আবুল কালাম জানান, ‘রেমালে’র প্রভাবে পায়রা নদীতে রোববার সকাল থেকে ৪-৫ ফুট বিপৎসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত আনোয়ার তুমপা জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘রেমালে’র প্রভাবে তেতুলবাড়িয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। শনিবার বিকেলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
এছাড়া ‘রেমাল’ মোকাবিলায় উপজেলায় ৩১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মাদ আশরাফুল আলম বলেন, যেখানে বাঁধ ভেঙে গেছে সেখানে জিওব্যাগ ফেলার জন্য পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলীকে বলা হয়েছে।
এছাড়া উপজেলার ২২৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও আমতলী-বরগুনা রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।