বৃহস্পতিবার ভোরে নীলফামারীর বালাপাড়া ইউনিয়নের নিজ সুন্দরখাতা গ্রামে বুড়িতিস্তা নদীর মূল বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়।
Published : 20 Jun 2024, 09:26 PM
উজানের ঢল আর ভারী বর্ষণে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় বুড়িতিস্তা নদীর বাঁধ ভেঙে দুটি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে দুই শতাধিক পরিবার। এ ছাড়া পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে শত শত একর ফসলি জমি।
স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের নিজ সুন্দরখাতা গ্রামে বুড়িতিস্তা নদীর মূল বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়। এ সময় বাঁধের অন্তত ২০০ মিটার ধসে গেছে।
পানিতে নিজ সুন্দরখাতা, মাঝিয়ালীর ডাঙ্গা গ্রামের ১০টি মহল্লার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, পানিতে অন্তত ৩০০ একর আবাদী জমি তলিয়েছে। এতে আমন বীজতলা, মরিচ, পাটসহ অন্যান্য ফসল নষ্ট হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড-পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আতিকুর রহমান বলেন, “বাঁধটি পাউবোর কিনা সে বিষয়ে কাগজপত্র যাচাই করা হচ্ছে। ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকায় ভাঙা অংশসহ বাঁধ উপচে গ্রামে পানি প্রবেশ করছে।
বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে জানিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, ভাঙা অংশে পানির স্রোত বেশি থাকায় এই মুহূর্তে মেরামত করা যাচ্ছে না। স্রোত কমলে বালির বস্তা ফেলে ভাঙা অংশ মেরামত করা হবে।
নিজ সুন্দরখাতা গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, “বুড়িতিস্তা নদীর মূল বাঁধটি নির্মিত হয় ষাটের দশকে। এরপর থেকে আর সংস্কার না হওয়ায় বিভিন্ন স্থান দুর্বল হয়ে পড়ে। এ কারণে এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে বাঁধটি সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছিল।
“ভোরে বাঁধের ২০০ মিটার অংশ ভেঙে গিয়ে দুই শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। এ ছাড়া পানিতে তলিয়ে গেছে ৩০০ একর আবাদী জমি।”
তিনি বলেন, “অনেক পুরনো ওই বাঁধটি শুধু সংস্কার করলেই হবে না। টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে গ্রামটিকে বাঁচাতে হবে।”
একই গ্রামের কৃষক আব্দুল মজিদ বলেন, “শুধু বাঁধ ভেঙেই নয়; ঢলের পানি আসায় বিভিন্ন স্থানে বাঁধ উপচে পানি প্রবেশ করছে গ্রামে। দ্রুত মেরামত করা না হলে পানি জমে থাকা জমিতে আবাদ করা সম্ভব হবে না। আবাদ করতে না পারলে অনেক কৃষক পরিবার নিঃস্ব হয়ে পড়বে।”
ডিমলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সেকেন্দার আলী জানান, বুড়িতিস্তা নদীর বাঁধ ভেঙে নিজ সুন্দরখাতা গ্রামের প্রায় এক হাজার বিঘা আবাদি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে করে মাঠে থাকা আমন ধানের বীজতলা, পাট, মরিচসহ অন্যান্য ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে কাজ চলছে।