পাবনায় পদ্মার শাখা নদীর বুক চিরে রাস্তা নির্মাণ করছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ভাটামালিক, যাতে সংকটে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন এলাকার কৃষক ও জেলেরা।
Published : 20 Jan 2022, 06:47 PM
প্রশাসন অভিযান চালিয়েছে বলে জানালেও কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি।
সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাউছার হাবিব বলেন, “চরের জমি থেকে মাটি কেটে রাস্তা নির্মাণের খবর পেয়ে অভিযান চালিয়েছি। কিন্তু ঘটনাস্থল মাটি কাটা যন্ত্র বা মাটি কাটায় জড়িত কাউকে না পাওয়ায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। তবে চরের জমি থেকে মাটি কাটা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছি। আর স্থানীয়দের সতর্ক করা হয়েছে।”
জেলার ঈশ্বরদী উপজেলায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাশে উৎপ্ন্ন পদ্মার এই শাখাটি পশ্চিম বাহিরচর এলাকা হয়ে ঘুরে সদর উপজেলার চরশ্রীকৃষ্ণপুরে আবার পদ্মায় মিলিত হয়েছে। বর্ষায় নদীটি বেগবান থাকলেও শীতে থাকে হাঁটুপানি। পানি কমে আসার সুযোগ নিয়ে ইটভাটার মাটি বহনের জন্য চরভগীরথপুর গ্রামে এই শাখা নদীর বুক চিরে রাস্তা বানিয়েছেন ইটভাটার মালিকরা।
বুধবার দুপুরে চরভগীরথপুর গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, নদীতে মাছ ধরছেন জেলে রুহুল আমিন।
রুহুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “১০ বছর ধরে এই নদীতে মাছ ধরি। শীতের এই সময় আগে বোয়াল, ট্যাংরা, বাইম, চিংড়িসহ নানা প্রজাতির মাছ পাওয়া যেত। রাস্তা তৈরির পর কোনো মাছই পাওয়া যাচ্ছে না।”
তাছাড়া নদী থেকে মাটি তুলে রাস্তা নির্মাণ করায় অনেকের ফসলি জমি ভেঙে নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন।
ভাটার মালিকদের মধ্যে একজন হলেন সদর উপজেলার হেমায়েতপুর ইউনিয়নের বরবাঙ্গাবাড়ি গ্রামের ইয়াসিন মৃধার ছেলে জুয়েল মৃধা। তিনি নদীর ওপর রাস্তা নির্মাণের কথা স্বীকার করেছেন।
জুয়েল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নদীর ওপার থেকে মাটি আনার জন্য রাস্তা বানানো হয়েছে। রাস্তা তৈরি করায় মানুষের উপকার হয়েছে। মানুষ সহজে নদী পার হতে পারছে।”
ভূমি কর্মকর্তা কাউছার হাবিব বলেন, “ভগীরথপুর এলাকাটি বেশ দুর্গম। অভিযান চালালে সেখানে পৌঁছানোর আগেই মাটিখেকোরা সটকে পড়ে। এই সুযোগে তারা আবারও একই কাজ করছে। আমরা নজরদারি বাড়িয়েছি। তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। দ্রুত নদীর বুক থেকে রাস্তাটি অপসারণ করা হবে।”