নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার ধলেশ্বরী নদীতে পাঁচ দিন আগে যাত্রীবাহী লঞ্চের ধাক্কায় ট্রলারডুবিতে আরও দুজনের লাশ উদ্ধারের পর মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ছয়ে।
Published : 09 Jan 2022, 07:55 PM
এমভি ফারহান-৬ লঞ্চের ধাক্কায় ওই ট্রলারডুবির ঘটনায় রোববার সকালেই চারজনের মৃতদেহ উদ্ধারের কথা জানিয়েছিল ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা।
এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে ধর্মগঞ্জ গুদারাঘাট এলাকায় আধা ঘণ্টার ব্যবধানে দুটি মরদেহ ভেসে উঠে বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন।
”বিকালে উদ্ধার হওয়া মোতালেব মিয়া ও আওলাদ হোসেনের মরদেহ এরই মধ্যে প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ছাড়া এ ঘটনায় আরও চারজন নিখোঁজ রয়েছে,” যোগ করেন আবদুল্লাহ আল আরেফিন।
সকালে ধলেশ্বরী নদীর বক্তাবলি এলাকা থেকে উদ্ধার মরদেহগুলো হলো নারায়ণগঞ্জ সদরের চর মধ্যনগরের সোহেল মিয়ার স্ত্রী জেসমিন আক্তার (৩০) ও তাদের বড় মেয়ে তাসমিন আক্তার (১৬), ত্রিশোর্ধ্ব তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিক জোসনা বেগম ও কলেজছাত্র সাব্বির (২০)।
এখনও নিখোঁজ রয়েছে- নিহত জেসমিন আক্তারের ছোট ছেলে তামিম (৮) এবং দেড় বছরের শিশু তাসফিয়া, নারায়ণগঞ্জের একটি মসজিদের মোয়াজ্জিন চল্লিষোর্ধ্ব আব্দুল্লাহ এবং ৬৫ বছর বয়সী হকার শামসুদ্দিন।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা আরও জানান, এদিন নদীর তলদেশে একটি ট্রলার শনাক্ত করা গেছে। তবে রাত হয়ে যাওয়ায় সেটি উঠানো সম্ভব হয়নি। সোমবার সেটি উঠানো হলে বুঝা যাবে সেটি লঞ্চের ধাক্কায় ডুবে যাওয়া ট্রলারটি কি না।
সন্ধ্যায় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিফাত ফেরদৌস জানান, মোতালেব মিয়া ও আওলাদ হোসেনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের অর্থ অনুদান দেওয়া হয়েছে।
পঞ্চম দিনের মতো উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত হলেও সোমবার ভোর থেকে নিখোঁজ চারজনের খুঁজে আবার তল্লাশি শুরু হবে বলে জানান ইউএনও।
বুধবার সকাল (৫ জানুয়ারি) সাড়ে ৮টার দিকে ধলেশ্বরী ও বুড়িগঙ্গা নদীর মোহনার কাছে ঘন কুয়াশার মধ্যে ট্রলারটিতে করে শতাধিক যাত্রী নদী পার হচ্ছিলেন। সে সময় হঠাৎ করে যাত্রীবাহী লঞ্চের ধাক্কায় ট্রলারটি ডুবে যায়। এতে অন্তত ১০ যাত্রী নিখোঁজ হন। ট্রলারের যাত্রীরা অনেকে আশপাশের নৌযানের সহায়তায় এবং সাঁতরে তীরে উঠলেও সবাই উঠতে পারেননি।
দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ‘ফারহান-৬’ নামের এই লঞ্চটির মালিক বরিশাল-৩ (মুলাদি-বাবুগঞ্জ) আসনের জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপু। লঞ্চটি ঢাকা-বেতুয়া রুটে চলাচল করে। দুর্ঘটনার পর কেরাণীগঞ্জের একটি ডকইয়ার্ড থেকে লঞ্চটি আটক এবং তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা হলেন- এমভি ফারহান-৬ লঞ্চের মাস্টার কামরুল হাসান (৪০), ইনচার্জ ড্রাইভার জসিম উদ্দিন ভুইয়া (৪০) ও সুকানি মো. জসিম মোল্লা (৩০)।
এ ঘটনায় লঞ্চের মাস্টারসহ তিনজনকে আসামি করে বিআইডব্লিউটিএ উপ-পরিচালক (নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগ) বাবু লাল বৈদ্য বৃহস্পতিবার ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করেন।
রোববার আদালত গ্রেপ্তার তিনজনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন।
আরও পড়ুন: