শরীয়তপুরে সদর উপজেলার চিতলিয়া ইউনিয়নে পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে প্রার্থীদের স্বাক্ষর জাল করে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের ঘটনা তদন্তের পর ওই ইউনিয়নে নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
Published : 09 Nov 2021, 12:41 PM
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. জাহিদ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোন ডটকমকে জানান, ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-সচিব আতিয়ার রহমান (আইন) স্বাক্ষরিত নির্বাচন স্থগিত সংক্রান্ত একটি চিঠি সোমবার সন্ধ্যায় তার কাছে পাঠানো হয়েছে। ফলে চিতলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন স্থগিত থাকবে।
জাহিদ বলেন, দ্বিতীয় ধাপে ১১ নভেম্বর শরীয়তপুর সদর উপজেলার চিতলিয়া ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। এই ইউনিয়নে ৩ জন চেয়ারম্যান পদে, ৪৮ প্রার্থী সাধারণ সদস্য পদে এবং ১২ জন সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। তাদের মনোনয়ন বৈধ বলে ঘোষণা করেছিল জেলা রিটানিং কর্মকর্তা।
গত ২৬ অক্টোবর চিতলীয়া ইউনিয়নে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল। আর ২৭ অক্টোবর ছিল প্রতীক বরাদ্দের দিন। ওইদিন রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে অনেক প্রার্থী জানতে পারেন, তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার হয়ে গেছে। কিন্তু তারা কেউ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আবেদন করেন নি।
“পরে প্রার্থীরা অভিযোগ তোলেন যে, আওয়ামী লীগের মনোনিত চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী রীগের সহ-সভাপতি হারুন আর রশিদ হাওলাদার পছন্দের লোকদের বিনা প্রতদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত করতে স্বাক্ষর জাল করে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন।” বলেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা।
ওই সময় সাংবাদিকরা এ বিষয়ে উপজেলা রিটানিং কর্মকর্তার মো. আলমগীর হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “গত ২৮ অক্টোবর শরীয়তপুর- ১ আসনের এমপি ইকবাল হোসেন অপু এক ভিডিও কলে আমাকে জানান যে, চিতলিয়া ইউনিয়নে কোন নির্বাচন হবে না, সবাই সিলেক্টেড হবে।”
পরে ঘটনাটি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে ঘটনাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়ে কমিটিকে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেন।
এ বিষয়ে এমপি ইকবাল হোসেন অপুর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
হারুন আর রশিদ হাওলাদার এলাকার লোকজনের কাছে এমপি ইকবাল হোসেন অপুর ‘ঘনিষ্ঠ লোক’ বলে পরিচিত।
নির্বাচন কর্মকর্তা জাহিদ বলেন, গত ৩ নভেম্বর ও ৪ নভেম্বর নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম-সচিব (আইন) মো. মাহাবুবার রহমান ও কমিশনের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব মো. আবু ইব্রাহীম শরীয়তপুরে তদন্ত করতে আসেন।
তারা সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত নারী সদস্য প্রার্থীদের আলাদা আলাদা বক্তব্য লিখিত আকারে গ্রহণ করেন। পরে তারা বক্তব্যগুলো নির্বাচন কমিশনে জমা দেন। তদন্ত শেষে কমিটির প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে নিবাচন কমিশন চিতলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন স্থগিত করেন।
চিতলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়াডের্র মেম্বার প্রার্থী টুটুল মাল বলেন, “আল্লাহ রহমত করছেন। অবৈধ নির্বাচন স্থগিত হয়েছে। সামনে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন করতে পারব।”