‘স্বামীর নির্যাতনের’ প্রতিকার চাইতে এক গৃহবধূ পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে ‘যৌন নিপীড়নের’ শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
Published : 09 Aug 2021, 10:47 PM
রাজশাহী নগরের বোসপাড়া পুলিশ ফাঁড়িতে রোববার এই ঘটনা ঘটে বলে ওই নারীর স্বজনের অভিযোগ।
অভিযোগ ওঠার পর সোমবার বোসপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই মো. শামীমকে কর্মস্থল থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এই ঘটনায় সোমবার বিকালে মেয়েটির মা বোয়ালিয়া থানায় এএসআই শামীমের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগের বরাত দিয়ে মেয়েটির পরিবার জানায়, ১৮ বছর বয়সী ওই গৃহবধূ স্বামীর নির্যাতনের শিকার হয়ে বাবার বাড়ি ফিরে যান। এই ঘটনায় গত ৪ অগাস্ট সরকারি জরুরি সেবার নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশের সহযোগিতা চান তার পরিবার।
মেয়েটির বাবা বলেন, নগরীর বোসপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই মো. শামীম তাদের বাসায় গিয়ে মেয়ের মুখে স্বামীর নির্যাতনের বর্ণনা শোনেন।
“স্বামীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এএসআই শামীম মেয়েটিকে পুলিশ ফাঁড়িতে দেখা করতে বলেন।”
মেয়েটি রোববার দুপুরে তার মাকে সঙ্গে করে পুলিশ ফাঁড়িতে যায়। এ সময় বাইরে একজন সেন্ট্রি ছিলেন। ভেতরে এএসআই শামীম ছিলেন একা।
অভিযোগে আরও বলা হয়, তদন্তের স্বার্থে প্রয়োজনীয় কথা বলার জন্য মেয়েটির মাকে শামীম বাইরে যেতে বলেন। মেয়েটির মা বাইরে এসে দাঁড়ানোর কিছুক্ষণ পরেই মেয়েটি চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে বাইরে বের হয়ে আসেন এবং ওই পুলিশ তাকে যৌন নিপীড়ন করেছেন বলে জানান।
মেয়েটির বাবা সাংবাদিকদের বলেন, রোববার বেলা ২টা ৩৬ মিনিটে তার স্ত্রী ফাঁড়ির সামনে থেকে ফোন করে তাকে ঘটনার কথা জানান। তিনি সঙ্গে সঙ্গে আবার ৯৯৯-এ ফোন করেন। তারা তাকে বোয়ালিয়া থানায় এসে অভিযোগ করতে বলেন।
ওইদিন বিকালেই বোয়ালিয়া থানায় এসে মেয়ের মা বাদী হয়ে এএসআই শামীমের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ করেন বলে জানান তিনি।
গৃহবধূর বাবা বলেন, ওইদিন রাতে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ে একটি সালিশ ডাকা হয়। সেখানে এএসআই শামীম তার [মেয়েটির বাবা] হাত ধরে ক্ষমা চান। কিন্তু তিনি তার সঙ্গে মীমাংসা করতে রাজি হননি।
তিনি অভিযোগ করেন, ওই সালিসে কোনো আপসনামা লেখা হয়নি এবং তারা তাতে সইও করেননি। কিন্তু রাতেই শামীম বোয়ালিয়া থানায় ভুয়া সই করে একটি আপসনামা জমা দেন।
স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর আরমান আলী বলেন, তার কার্যালয়ে এএসআই শামীম মেয়েটির বাবার হাতে ধরে ক্ষমা চেয়ে বলেছেন, তিনি তেমন কোনো অন্যায় করেননি। তারপরও তিনি ক্ষমা চাচ্ছেন।
এদিকে, মেয়েটির বাবা সোমবার দুপুরে রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি খুলে বলেন। পুলিশ কমিশনার তাদের বোয়ালিয়া থানার ওসির কাছে পাঠান।
এ ব্যাপারে ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ বলেন, গৃহবধূর পরিবারের সদস্যরা আপসের কথা অস্বীকার করছেন। তাদের অভিযোগের এখন তদন্ত হবে। ইতিমধ্যেই এএসআই শামীমকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।