নারায়ণগঞ্জে ‘ধর্ষণ-হত্যার’ দায় স্বীকার করে তিন যুবক জবানবন্দি দেওয়ার পর সেই মেয়েটি জীবিত ফিরে আসায় পুলিশের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে আদালত।
Published : 27 Aug 2020, 10:03 PM
বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম কাওসার আলমের আদালত নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি আসাদুজ্জামান এবং ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শামীম আল মামুনকে এ আদেশ দেয়।
আদেশে আগামী ৩১ অগাস্ট তাদেরকে আদালতে উপস্থিত হয়ে ওই কিশোরী কীভাবে মৃত
হল, মৃত থেকে আবার কীভাবে জীবিত ফেরত এল সে-ই বিষয়ে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।
গত ৪ জুলাই ১৫ বছর বয়সী ওই কিশোরী শহরের দেওভোগের মা-বাবার বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়। এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় জিডি ও মামলা করে তার পরিবার। ওই মামলায় পুলিশ আব্দুল্লাহ, রকিব ও নৌকার মাঝি খলিলুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ৯ অগাস্ট তারা আদালতে জবানবন্দিতে তারা ‘অপহরণ, ধর্ষণ ও হত্যা করে লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার’ দায় স্বীকার করেন।
এদিকে ঘটনার ৫১ দিন পর ২৩ অগাস্ট ওই কিশোরী মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তাকে এনে পুলিশে সোর্পদ করে পরিবারের লোকজন। ফিরে আসার পর ওই কিশোরী আদালতে বলেছে, ইকবাল নামের এক যুবককে বিয়ে করে বন্দর এলাকার এক ভাড়া বাড়িতে সংসার পেতেছিল সে।
“আমরা আদালতকে জানিয়েছি, পুলিশের রিমান্ড প্রশ্নবিদ্ধ। তাই আবার আসামিদের থানায় পুলিশে রিমান্ডে না দিয়ে জেলগেইটে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আদালতে আবেদন জানাই।”
আদালত ইকবালসহ চার আসামির উপস্থিতিতে আগামী ৩১ অগাস্ট তাদের জামিন ও রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য্য করে এবং একই সঙ্গে থানার ওসি ও তদন্তকারী কর্মকর্তাকে শোকজ করে ওই ব্যাখা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেয় বলে জানান তিনি।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের আসাদুজ্জামান জানান, ওই মামলার সব আসামির উপস্থিতিতে আদালত আগামী ৩১ অগাস্ট শুনানির দিন ধার্য্য করেছে।
“ওসি ও তদন্তকারী কর্মকর্তাকে শোকজ করেছেন।”
এদিকে, বেলা ১১টার দিকে আদালত প্রাঙ্গণে এই ধর্ষণ হত্যা, গুমের মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় আব্দুল্লাহ্, রকিব ও খলিলকে ফাঁসানোর অভিযোগে মানববন্ধন করেছে তাদের পরিবার ও এলাকাবাসী। তারা মামলা প্রত্যাহার এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
আদালতের নির্দেশে ওই কিশোরী তার বাবা-মায়ের কাছে রয়েছে।
এ ঘটনায় কিশোরীর জীবিত ফেরা ও তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষসহ নির্যাতনের অভিযোগ তদন্তে পুলিশ পৃথক দুইটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। অভিযুক্ত তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শামীমকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।