মাগুরায় গড়াই নদীতে বাঁধ দিচ্ছে এলাকাবাসী

বর্ষায় নদীর ভাঙন ঠেকাতে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলায় নিজেদের অর্থায়নে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মাণে নেমেছে এলাকার যুবকেরা।

মাগুরা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 May 2020, 02:27 PM
Updated : 10 May 2020, 02:27 PM

উপজেলার ৬ নম্বর কাদিরপাড়া ইউনিয়নের দোরাননগর মধ্যপাড়া গ্রামে গড়াই নদীর এ বাঁধ নির্মাণ কাজে প্রতিদিন প্রায় ১০০ জন যুবক অংশ নিচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, অনেক আগে থেকেই নদী ভাঙনের কবলে পড়েছে দোরাননগর মধ্যপাড়া গ্রাম। শত শত একর জমি ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। আর এ বছর বর্ষা আসার আগেই শুরু হয়েছে নদী ভাঙ্ন। এখন বাঁধ নির্মাণের প্রয়োজন হলেও করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে এবার শ্রমিকের সংকট দেখা দিয়েছে। তাই এই এলাকার যুবকদের নিয়ে গঠিত সংগঠন ‘আমরা স্বপ্নবাজ’-স্বেচ্ছায় নিজেদের অর্থায়নে নদী ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য এ উদ্যোগ নিয়েছে।

সংগঠনটির সভাপতি অসীম কুমার মণ্ডল বলেন, “করোনাভাইরাসের কারণে এখন শ্রমিক পাওয়া দুষ্কর। তাই নদী ভাঙনের হাত থেকে গ্রামকে রক্ষা করতে বাঁধ নির্মাণ করার জন্য আমরা এলাকার যুবকেরা নিজেদের অর্থে বেশ কিছু বাঁশ কিনেছি। তাছাড়া এলাকায় যাদের বাঁশ আছে, তাদের কাছ থেকেও বাঁশ নিয়েছি। এভাবে তিন শতাধিক বাঁশ জোগাড় করেছি। আবার যাদের বাঁশ নেই তাদের কাছ থেকে টাকা জোগাড় করেছি। একইভাবে আধা কিলোমিটারের মধ্যে আমরা ইতোমধ্যে তিনটি বাঁধ নির্মাণ করেছি।“
“নদী ভাঙ্ন রোধে এখন প্রতিদিন প্রায় ১০০ জন যুবক প্রতক্ষ্যভাবে বাঁধ নির্মাণ কাজে অংশগ্রহণ করছেন। স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে যুবকেরা ব্যতিক্রমধর্মী এবং অনুকরণীয় এই উদ্যোগ গ্রহণ করায় এলাকাবাসী তাদের উৎসাহ দিতে পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। এখন আরও অন্তত দুটি বাঁধ নির্মাণ করা প্রয়োজন। কিন্তু নিজেদের অর্থায়নে আর কতোইবা করা যায়।“

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহায়তা কামনা করেন অসীম।  

দোরাননগন গ্রামের প্রবীণ রণজিত কুমার বিশ্বাস বলেন, “আমাদের এলাকার যুবক ছেলেরা যা করছে, তা এক কথায় অনন্য। প্রতিবছর গড়াই নদীর ভয়াবহ ভাঙ্গনে অনেক মানুষের ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। তারা অন্যত্র গিয়ে বসতি গড়ে তুলেছেন। নদী ভাঙনের কারণে ইতোমধ্যে শত শত একর জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।”

একসঙ্গে কাজ করার ক্ষেত্রে করোনাভাইরাসের ঝুঁকির বিষয়ে জানতে চাইলে অসীম বলেন,“যতটা সম্ভব সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আর আমাদের এ কাজের তদারকি করছেন এলাকার বয়স্ক মানুষেরা।”