১৯৭১ সালের ১৩ ডিসেম্বর নীলফামারী জেলাকে হানাদারমুক্ত করেন এ অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধারা।
নীলফামারী জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার শওকত আলী টুটুল বলেন, “নয় মাসের গেরিলা আক্রমণ আর সম্মুখ সমরে নীলফামারী মহকুমার ডোমার, ডিমলা, জলঢাকা, কিশোরগঞ্জ থানাকে মুক্ত করে নীরফামারী শহরের দিকে এগিয়ে আসে মুক্তিযোদ্ধারা, মুজিববাহিনী ও মুক্তিবাহিনী সদস্যরা।
“আমরা ১০ ডিসেম্বর নীলফামারীকে হানাদারমুক্ত করতে আক্রমণ শুরু করি। ১১ ডিসেম্বর সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর গোলাগুলি চলে। এরপর রাতের দিকে তা বন্ধ হয়। ১২ ডিসেম্বর রাতে শহরের চারদিক থেকে মুক্তিবাহিনী, মুজিববাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধারা চারিদিক থেকে প্রবল আক্রমণ চালালে হানাদার বাহিনী পরাজিত হয়ে নীলফামারী শহর ছেড়ে আশ্রয় নেয় সৈয়দপুর সেনানিবাসে। ১৩ ডিসেম্বর ভোরে ৬ নম্বর সেক্টরের কোম্পানি কমান্ডার গোলাম মোস্তাফার নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা শহরে প্রবেশ করেন। জয় বাংলা স্লোগান দিতে দিতে রাস্তায় নেমে আসে মুক্তিকামী সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ। তারা বিজয়ের উল্লাস আর স্লোগানে প্রকম্পিত করে তোলে সারা শহর। সেই দিন থেকে নীলফামারী জেলায় হানাদারমুক্তি দিবস পালন করা হয়।”
নীলফামারী হানাদারমুক্তি দিবস উপলক্ষে শুক্রবার সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমপ্লেক্স চত্বরে জাতীয় ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে।
পরে ডিসির মোড় চত্বরে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে ফুল দেয় জেলা প্রশাসন, জেলা পরিষদ, সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সদর উপজেলা পরিষদ, শহীদ পরিবারবর্গ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডসহ বিভিন্ন সংগঠনসহ সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ।
বেলা ১১টায় সেখান থেকে সদর উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের যৌথ আয়োজনে শোভাযাত্রা বের হয়ে শহর প্রদক্ষিণ করে। পরে তারা চৌরঙ্গী মোড়ে আলোচনা সভায় যোগ দেন।
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার জয়নাল আবেদীন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ফজলুল হক, জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী, পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি মসফিকুল ইসলাম রিন্টু, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহিদ মাহমুদ এসব অনুষ্ঠানে ছিলেন।