ছাত্রীর সঙ্গে শিক্ষকের অশালীন আচরণের অভিযোগ 

বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলায় এক স্কুলশিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীর সঙ্গে অশালীন আচরণের অভিযোগ উঠেছে।

বগুড়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 July 2019, 06:03 PM
Updated : 4 July 2019, 06:03 PM

কামারপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের এই সহকারী শিক্ষকের নাম খায়রুজ্জামান।

এ বিষয়টির আপস মীমাংশা করতে বৃহস্পতিবার দুপুরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে ওই ছাত্রীর অভিভাবক ও ওই শিক্ষকসহ অন্য শিক্ষকদের বৈঠক হয়ে।

খবর পেয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীরাসহ স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে হাজির হন।

বৈঠক শেষে উপস্থিত সংবাদকর্মী ও স্থানীয় লোকজনের উদ্যেশে ঘটনার বিবরণ ও বৈঠকের সিদ্ধান্তের কথা জানান প্রধান শিক্ষক।

মেয়েটি সাংবাদিকদের বলেন, তার ক্লিপবোর্ডে কার্টুনের ছবি থাকায় শিক্ষক খায়রুজ্জামান বোর্ডটি কেড়ে নিয়ে তাতে থুথু দেন। এর প্রতিবাদ করা হলে তিনি মেয়েটির মাথায় হাত বুলিয়ে দেন।

বিষয়টি ওই ছাত্রী তার মাকে জানান। অন্য ছাত্রীদের সঙ্গেও এই শিক্ষক এ ধরনের নানা অশালীন আচরণ করেন বলে ছাত্রীটি জানান।

মেয়েটির মা সাংবাদিকদের বলেন, তার মেয়ে কামারপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ শ্রেণির ছাত্রী। বুধবার পরীক্ষা চলাকালে সহকারী শিক্ষক খায়রুজ্জামান তার মেয়ের মাথায় হাত বুলানোর নামে তাকে অপমান করেছেন। এতে তার মেয়ে লজ্জা আর অপমানে কাঁদতে কাঁদতে বাড়িতে যান।

বিষয়টি জানাজানি হলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক সন্ধ্যায় তাদের বাড়ি গিয়ে মেয়েটির বাবাকে আপস-মীমাংসা করতে বলেন বলে মেয়েটির মা জানান।

“এছাড়াও শিক্ষক খায়রুজ্জামানও আমাদের বাড়ি গিয়ে হাতে-পায়ে ধরে ক্ষমা চান। এক পর্যায়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে বিদ্যালয়ে ডেকে নিয়ে বৈঠকে বসে শিক্ষক খায়রুজ্জামান সবার সামনে ভুল স্বীকার করেন এবং পরবর্তীতে এ ধরনের কাজ করবে না মর্মে ক্ষমা চাইলে তাকে ক্ষমা করে দিয়েছি।”

ওই স্কুলের ৯ম শ্রেণিরিএক ছাত্র বলেন, “খায়রুজ্জামান স্যার প্রায়ই ছাত্রীদের সাথে খারাপ ভাষায় কথা বলেন। ক্লাসে এসে ছাত্রীদের গা ঘেঁষে বসেন। তার আচারণ ভালো নয়। বিষয়টি সবাই জানে।”

১০ শ্রেণির এক ছাত্রী বলেন, “কোনোদিন পড়া না হলে স্যার পিছন দিক থেকে পায়ের হাঁটু দিয়ে পিঠে আঘাত করেন। কখনও কখনও মেয়েদের উদ্যোশ্যে নানা কুরুচিপূর্ণ কথা বলেন।তখন ছাত্রীরা লজ্জায় মাথা নিচু করে থাকেন। মাঝে মাঝেই গায়ে হাত দিয়েও কথা বলেন। এতে অস্বস্তি লাগে।”

বিদ্যালয়ের পাশের লোকজন বলেন, খায়রুজ্জামান মাস্টারের আচারণ নিয়ে অনেক সময় অনেকেই অভিযোগ তুললেও কিছু হয় না। তার স্বভাব-চরিত্র ভালো নয়। ছাত্রীদের নিয়ে বিভিন্ন ধরনের আচরণের অভিযোগ উঠলেও পরে থেমে যায়।

প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, বিদ্যালয়ে অর্ধবার্ষিক পরিক্ষা চলছে। বুধবার ছিল ১০ শ্রেণির পৌরনীতি পরীক্ষা। পরীক্ষা চলাকালে বিদ্যালয়ের ভুগোল বিষয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুজ্জামান ওই ছাত্রীর কাছ থেকে হার্ডবোর্ড নিয়ে নেন এবং মাথায় হাত বুলিয়ে ভালোভাবে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য বলেন।

“এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় উভয়কে নিয়ে বৈঠকে বসে সহকারী শিক্ষক খায়রুজ্জামান ভুল স্বীকার করার মাধ্যমে এবং এ ধরনের ঘটনা আর ঘটবে না মর্মে আপস-মীমাংসা করা হয়েছে।”

শিক্ষক খায়রুজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরীক্ষার হলে মেয়েটির মাথায় হাত বুলিয়ে পরীক্ষার বিষয়ে জানতে চেয়েছেন মাত্র। এর বেশি কিছু নয়। তারপরও মেয়ে ও তার বাবা-মার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন তিনি।