নুসরাত জাহান রাফির বক্তব্যের ভিডিও রেকর্ড প্রচারে সাইবার ট্রাইব্যুনালের মামলায় সোনাগাজী মডেল থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের গ্রেপ্তারে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন এই তরুণীর বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান।
Published : 16 Jun 2019, 11:22 PM
আদালতের পরোয়ানা জারির ২০ দিন পর রোববার বিকালে হাই কোর্ট এলাকা থেকে মোয়াজ্জেমকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগরীর শাহবাগ থানায় নেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
অগ্নিদগ্ধ নুসরাতের মৃত্যুর পর গত ১৫ এপ্রিল ওই ভিডিও ছড়ানোর জন্য ওসি মোয়াজ্জেমকে আসামি করে ঢাকায় বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
এ মামলায় ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই)। এরপর পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে ওসি মোয়াজ্জেমের নিজের মোবাইল ফোনে জবানবন্দি রেকর্ড করার এবং তা ছড়িয়ে দেওয়ার প্রমাণ পাওয়ার কথা বলা হয়।
পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনাল গত ২৭ মে মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেয়।
নোমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে গ্রেপ্তারে আমরা সন্তুষ্ট। আমি চাই তিনি যতটুকু অপরাধ করেছেন তার সে পরিমাণ শাস্তি হোক। নুসরাতের ভিডিও ধারণ ও বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারসহ নানা অপপ্রচারের সঙ্গে আরও কেউ যদি জড়িত থাকে তাদেরও আইনের আওতায় এনে বিচার করা হোক।”
“আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন মামলা করে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। ওসি মোয়াজ্জেমকে এই মামলায় আসামি করায় আজকে তিনি গ্রেপ্তার হলেন। আমরা ন্যায়বিচার পাচ্ছি।”
নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বলেন, “আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। তিনিও স্বজন হারানোর ব্যথা বোঝেন। নুসরাতকে হারিয়ে আমি যে অসহনীয় কষ্ট ও দুঃখের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি আজকে নুসরাত হত্যাকারীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর পাশাপাশি ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে কিছুটা হলেও সেই কষ্ট ভোলার চেষ্টা করতে পারব।”
গত ৬ এপ্রিল সোনাগাজীর ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের গায়ে আগুন দেওয়া হয়। এই তরুণী নিজেই বলে গেছেন, অধ্যক্ষ সিরাজের বিরুদ্ধে মামলা তুলতে রাজি না হওয়ায় তার গায়ে আগুন দেওয়া হয়।
পাঁচ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয় নুসরাতের।
গায়ে আগুন দেওয়ার আগে নুসরাত মাদ্রাসার তৎকালীন অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করতে ওসি মোয়াজ্জেম তাকে থানা ডেকে নিয়ে যান। সেখানে তার বক্তব্য রেকর্ড করেন, যা পরবর্তীতে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন বলে অভিযোগ ওঠে।