‘ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ উপেক্ষা করে’ পঞ্চগড়ে এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে।
Published : 28 May 2019, 11:51 PM
ভুক্তভোগী ড. জিন্নাত আরা রোকেয়া চৌধুরী রাস্নাসহ কয়েকজন সোমবার রাতে পঞ্চগড় প্রেসক্লাবে সংবাদ এক সম্মেমলনে এ অভিযোগ করেন।
জিন্নাত আরা সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার মামাত বোন এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার ড. শেখ সা’দ আহমেদের স্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে জিন্নাত আরা রোকেয়া চৌধুরী রাস্না লিখিত বক্তব্যে বলেন, প্রায় ২৩ বছর আগে তিনি ও তার স্বামী এবং তার তার মামা পঞ্চগড়ের প্রয়াত সংসদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুসের স্ত্রী রওশন আরা মিলে বাংলাবান্ধা মৌজায় এক একর জমি ক্রয় করেন। এর মধ্যে তার ও তার স্বামীর ৪৫ শতক জমি রয়েছে।
কিছুদিন আগে তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা ইউপি চেয়ারম্যান কুদরত-ই-খুদা মিলন ও তার লোকজন রাতের অন্ধকারে ৩৩ শতক জমিতে জোরপূর্বক দোকান ঘর ও শ্যামলী পরিবহনের কাউন্টার নির্মাণ কাজ শুরু করেন বলে রাস্নার অভিযোগ। তিনি বলেন, “আমাদের আবেদনের পর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট গত ২৫ মে নালিশি জমিতে ১৪৪ ধারা জারি করেন; কিন্তু ওই আদেশ উপেক্ষা করে চেয়ারম্যান ওই জমিতে পরিবহন কাউন্টারের সাইনবোর্ড স্থাপনসহ অবকাঠামো নির্মাণ কাজ অব্যাহত রাখেন।
সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধা কামরুল ইসলাম ঠান্ডু অভিযোগ করেন, “বাংলাবান্ধায় আমার ২০ শতক জমি চেয়ারম্যান মিলন ও তার লোকজন দখল করে রেখেছে। জমির পাশে গেলেই তার লোকজন মারতে আসে।
“আমার প্রয়াত বাবা কমরুদ্দীন আহমেদ ও বড় ভাই আব্দুল কুদ্দুস পঞ্চগড়ের সংসদ সদস্য ছিলেন। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। আমাদের মতো লোকের জমিও চেয়ারম্যান মিলন জবরদখল করার সাহস পেলে সাধারণ মানুষদের কী হবে!”
“এই চাঁদা না দেওয়ায় গত ১৫ মে চেয়ারম্যানের নির্দেশে তার লোকজন আমার ম্যানেজারের ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। এ ঘটনায় তেঁতুলিয়া থানায় মামলা করতে গেলে তারা আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেন।”
গত ১৯ মে ইউপি চেয়ারম্যান মিলন ও তার ৬ জন সহযোগীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন হামিদ। আদালতের নির্দেশে মামলাটি থানা রেকর্ড করলেও আসামিদের গ্রেপ্তার করছে না। ইউপি চেয়ারম্যানসহ অন্যরা প্রকাশ্যে চলাফেরা করছেন বলেও হামিদ অভিযোগ করেন।
এ নিয়ে বাংলাবান্ধা ইউপি চেয়ারম্যান কুদরত-ই-খুদা মিলন বলেন, “১৪৪ ধারা জারির আগেই বায়নামাসূত্রে মালিক হয়ে আমি ওই জমিতে কাউন্টার নির্মাণসহ অন্যান্য কাজ করেছি। রাস্নাদের জমি তাদের দখলেই আছে।
“হামিদের কাছে আমি কোনো চাঁদা নেইনি বা চাইনি। ১৫ মে আমি গ্রাম আদালতের একটি প্রশিক্ষণে ছিলাম।”
প্রকৃতপক্ষে জমির বৈধ মালিক না হওয়ায় সমঝোতার মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ পাবার আশায় তিনি এসব কাজ করেছেন বলে মিলনের ভাষ্য।
কোনো মুক্তিযোদ্ধার জমি দখলের অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করেন তিনি।
তেঁতুলিয়া মডেল থানার ওসি জহুরুল ইসলাম বলেন, আদালতের নির্দেশে নালিশি জমিতে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। হামিদের অভিযোগ সত্য নয়। আদালতের নির্দেশের পরই তার মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।